রাস্তা-ঘাটের কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন? নিজেই ঘুরে দেখে আসুন। ভাই রাস্তার কী অবস্থা বলেন- জাগো নিউজের এমন প্রশ্ন শুনেই যেন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন সাতক্ষীরা শহরের কদমতলা এলাকার সাদিকুর রহমান। অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের ওপর।
Advertisement
তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় কোনো জনপ্রতিনিধি নেই। নেই কোনো সরকারি লোক। থাকলে রাস্তাঘাটের দুর্দশা এমন হতো না। জনগণের দুর্ভোগ হতো না। শহরের অলিগলিসহ প্রধান প্রধান সড়কগুলো ঘুরে আসুন দেখবেন রাস্তার কী অবস্থা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের বাংলো, সড়ক ও জনপদ বিভাগের কার্যালয়, সাতক্ষীরা বিজিবি সদর দফতর এসব দফতরগুলোর সামনের সড়কেই হাঁটু পর্যন্ত কাদা। প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে চলাচলের কোনো উপায় নেই।
সাদিকুর রহমান বলেন, রাস্তাঘাটের এই দুর্দশা একদিনে সৃষ্টি হয়নি। ধীরে ধীরে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি পর্যায় থেকেও কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সাতক্ষীরাবাসীকে রাস্তার করুণ পরিণতি মেনে নিতে হয়েছে।
ইতোপূর্বে কোনো সরকারের সময় সাতক্ষীরার রাস্তাঘাটের এমন বেহাল দশা হয়নি। এই রাস্তা দিয়েই চলাফেরা করেন সাতক্ষীরার চারজন এমপি। সেই সঙ্গে জেলা পর্যায়ের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। সবাই এই বেহাল দশা দেখেও যেন এই দুর্ভোগের চিত্র দেখে না।
Advertisement
গাড়িচালক মিলন সরদার অনেকটা আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, রাস্তার কথা আর কী বলবো বলুন। সাতক্ষীরা-খুলনা-যশোর-কালিগঞ্জ-আশাশুনি-শ্যামনগর সকল সড়কের অবস্থা একই, বেহাল দশা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। কখন যে গাড়ি উল্টে যায় এমন আতঙ্কের মধ্যে থাকি সব সময়।
সড়কের বেহাল দশার কারণে গত কয়েকদিন আগে দুর্ঘটনায় একদিনেই চারটি প্রাণ ঝরেছে সড়কে। ছোট-খাটো দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিতে সড়কের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে সাতক্ষীরাবাসীর।
এদিকে, মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে সাতক্ষীরার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউদ্দীন জাগো নিউজকে বলেন, সাতক্ষীরা সদরের প্রধান সড়কটি অত্যন্ত খারাপ। এটার কাজ শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে তিনি জাগো নিউজকে আগে জানিয়েছিলেন, আগামী ঈদুল আজহার আগেই সাতক্ষীরার প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ হবে।
তিনি আরো বলেন, গত অর্থবছরে তিন কোটি টাকার বাজেট ছিল। সে টাকায় যেটুকু সংস্কার সম্ভব সেটুকু করা হয়েছে। সড়ক ও জনপথের আওতাধীন জেলায় ২৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। সব সড়কই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বৃষ্টিতে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়েছে।
Advertisement
আকরামুল ইসলাম/এএম/জেআইএম