জাতীয়

দেশে ফিরেছেন সিদ্দিকুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি কলেজের রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে আন্দোলনে নেমে পুলিশের টিয়ারসেলে দৃষ্টিশক্তি হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান দেশে ফিরেছেন।

Advertisement

শুক্রবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে তাকে বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তবে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিমানবন্দর থেকে বের হননি সিদ্দিকুর।

এদিকে শুক্রবার দুপুরের দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার কারণে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। তবে অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত কোনো কারণে সিদ্দিকুরের বিমানবন্দর থেকে বের হতে দেরি হচ্ছে কি না সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

শেখ ফরিদ নামে সিদ্দিকুরের এক বন্ধু তার বিমানবন্দরে অবতরণের কথা জানিয়েছেন। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সিদ্দিকুরের সঙ্গে মোবাইলে কথাও বলেছেন শেখ ফরিদ। গত ২০ জুলাই আন্দোলনে নেমে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হন সিদ্দিকুর। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে নেয়া হয়।

Advertisement

এ দিকে সিদ্দিকুরের দেশে ফেরা ঘিরে বিমানবন্দরে চোখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তার বন্ধুরা।

গত ২০ জুলাই সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে নীতিমালা প্রণয়নসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যান।

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার পর পুলিশ ও ছাত্রদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ হঠাৎই টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ শুরু করে। এ ঘটনায় তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমানকে (২৩) ঢাকা মেডিকেল থেকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানকার চিকিৎসকরা বলেন, সিদ্দিকুর ডান চোখে আলো দেখছেন না। বাঁ চোখের একদিক থেকে আলো কিছুটা উপলব্ধি করতে পারছে।

Advertisement

এরপরই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিদ্দিকুরকে চেন্নাইয়ে পাঠানো হয়। চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন সিদ্দিকুর।

ওই ঘটনার পরদিনই রাতে ১২০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। মামলা নং ২৬।

ঘটনার পর ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিদ্দিকুরের কীভাবে আঘাত লাগল, তা খতিয়ে দেখা হবে। এ আঘাত সাবোটাজ কি না, তা-ও দেখব।’

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ বড় একটি বাহিনী। বাহিনীতে অতিউৎসাহী কিছু পুলিশ সদস্য থাকতে পারে। সিদ্দিকুরের ঘটনায় যদি এমন কোনো অতিউৎসাহী সদস্য জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সিদ্দিকুরের চোখ নষ্ট হওয়ার খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তে গত ২২ জুলাই রমনা বিভাগ পুলিশ পৃথক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান রমনা বিভাগের এডিসি (প্রশাসন) নাবিদ কামাল শৈবাল।

একই ঘটনায় ২৩ জুলাই ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপস) মীর রেজাউল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন ভারপ্রাপ্ত ডিসি ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও এডিসি রমনা আশরাফুল আলম।

এএসএস/এনএফ/পিআর