বাতিল ফ্লাইটের হজযাত্রী আব্দুল কাদের সহযাত্রীদের সঙ্গে গল্প-গুজব ও আড্ডা দিয়ে দিন পার করছেন। ফ্লাইট পেতে আল্লাহ’র দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি। বললেন, কারো দ্বারা কিছু করা সম্ভব না। আল্লাহ তার মেহমানদের যখন ডাক দেবেন, তখনই যাওয়া হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার বাতিল হওয়া হজ ফ্লাইট বিজি-৩০৫৫ ফ্লাইটের কনফার্ম টিকিট ছিলো আব্দুল কাদেরের। মোয়াল্লিমের জবান পেয়ে তিনি বুধবার দুপুরেই ১৫ জনের দলের সঙ্গে হজ ক্যম্পে এসেছেন সন্দ্বীপ থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে মোয়াল্লিম ক্ষমা চেয়ে ফ্লাইট বাতিলের বিষয়টি জানায়। ভিসা জটিলতার কারণে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ায় বিজি-৩০৫৫ ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে বলে জানানো হয়েছে তাদের। শনিবার বিকেলের ফ্লাইটে বুকিং দেয়া হয়েছে। হয়তো ওই দিন যেতে পারবেন আব্দুল কাদের।
মনে কোনো কষ্ট আছে কি না জানতে চাইলে আব্দুল কাদের জাগো নিউজকে বলেন, কষ্ট, ক্ষোভ, অভিযোগ কিছুই নাই। আল্লাহকে পাইতে হলে কষ্টকে জয় করতে হয়। করার চেষ্টা করছি। এখন এসবকে কোনো কষ্টই মনে হয় না।
হজ ক্যাম্প ঘুরে দেখা গেছে, আব্দুল কাদেরের মতো অনেকেই হজ ক্যাম্পের ফ্লোরে বসে নিকট আত্মীয় কিংবা সহযাত্রীদের সঙ্গে গল্প-গুজব করে সময় কাটাচ্ছেন। কারোর মধ্যে কোনো রকমের হতাশা বা কষ্ট লক্ষ্য করা যায়নি।
Advertisement
এ বছর অনুমতি ব্যতীত কোনো দর্শনার্থীকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে প্রচার করা হলেও শরীর ও ব্যাগ তল্লাশি করে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। ডরমেটরির গেটে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, র্যাব ও প্রশিক্ষিত স্কাউট টিমের সদস্যরা কর্তব্যরত। হজযাত্রীদের খাবারের সুবিধা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পের ভেতর বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট ও দোকান বসানো হয়েছে। রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বইয়ের দোকান।
অনেক হজযাত্রী দোকানে দাঁড়িয়ে হাদিস আর মাসলা মাসায়েলের বই পড়ছিলেন ও কিনছিলেন। এমন একজন বগুড়ার কাহালু এলাকার হজযাত্রী আমিনুল ইসলাম। আমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটের বিজি-১০৫৫ ফ্লাইটের হজযাত্রী ছিলেন তিনি। ফ্লাইট বাতিলের সংবাদ শুনে তার মন অনেকটা খারাপ। শুক্রবারের কোনো এক ফ্লাইটে উড়াল দেবার আশা দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে আমিনুল ইসলামকে। তারও একই কথা, মেহমানদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন আল্লাহ।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই বিমানের হজ ফ্লাইট শুরুর পর থেকে ই-ভিসা জটিলতা আর যাত্রী সংকটের কারণে বিমান ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ২৬টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট হজযাত্রীর সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট পৌঁছে ২৪ জুলাই। শেষ ফ্লাইট যাবে ২৮ আগস্ট। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর ও শেষ ফিরতি ফ্লাইট ৫ অক্টোবর। এ বছর চাঁদ দেখা সাপেক্ষে হজ অনুষ্ঠিত হবে ১ সেপ্টেম্বর।
আরএম/এআরএস/এমএস/এমএস
Advertisement