অর্থনীতি

শেয়ার কেলেঙ্কারি : দুই আসামির জামিন

প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ শেয়ার কেলেঙ্কারির মামলায় প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন পরিচালক আনু জায়গীরদার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান জামিন পেয়েছেন।

Advertisement

আসামিরা ট্রাইবুন্যালে জামিন আবেদন করলে বুধবার শেয়ারবাজার সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আকবর আলী শেখ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি ২৪ আগস্ট মামলার পরবর্তী বিচারকার্য পরিচালনার জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

১৯৯৬ সালে শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর আগে এ মামলায় চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল র‌্যাংগস গ্রুপের কর্ণধার এম এ রউফ চৌধুরী ও এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ এইচ চৌধুরী বেকসুর খালাস পান।

Advertisement

আনু জায়গীরদার এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমানের মামলটির বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ট্রাইবুন্যাল ২৪ জুলাই পূর্বনির্ধারিত ছিল। কিন্তু ওইদিন আসামিরা ট্রাইবুন্যালে উপস্থিত হয়নি। এতে বাদীপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করেছিলেন ট্রাইবুন্যালের বিচারক।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা খান বলেন, এ মামলায় অভিযুক্ত আনু জায়গীরদার এবং মশিউর রহমানের আইনজীবী জামিন আবেদন করে। ট্রাইবুন্যাল তা মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া মামলার বিচার কাজ পরিচালনার জন্য ২৪ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজের নামে ১৯৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন করেছে।

এ সময়ে তারা মিতা টেক্সটাইল, প্রাইম টেক্সটাইল, বাটা সু ও বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার লেনদেন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ওই সময়ে মোট ১২৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা লেনদেন করে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শুধু ফরেন ডেলিভারি ভার্সেস পেমেন্টের (ডিভিপি) মাধ্যমে ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন করে।

Advertisement

মামলার এক নম্বর আসামি প্রিমিয়াম সিকিউরিটিজ ওই সময়ে ২১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৩টি শেয়ার বিক্রি করে, যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

স্টক এক্সচেঞ্জের রেকর্ড মোতাবেক আসামিরা এসিআই লিমিটেডের ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১৯টি শেয়ার বিক্রি করে। অথচ ব্যাংক রেকর্ড অনুযায়ী শেয়ার বিক্রির পরিমাণ ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি, যার মধ্যে ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ারের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

একইভাবে আসামিরা ডিভিপির মাধ্যম ছাড়াও স্থানীয়ভাবে শেয়ারের অন্যতম ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। আসামিরা ওই সময়ের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৯৫টি শেয়ার বিক্রি করেন।

এর মধ্যে ডিভিপির মাধ্যমে ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭০০টি শেয়ার বিক্রি করেন। আর এখানেও অনিষ্পত্তি হওয়া শেয়ার ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৫০০টি। এসব ফরেন ডিভিপির মাধ্যমে লেনদেন নিষ্পত্তির জন্য প্রতিষ্ঠানটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ইন্দোসুয়েজ ব্যাংক ব্যবহার করত।

আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি, অপকার ও অনিষ্ট করেছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ-১৯৬৯ এর ২১ ধারা বলে গঠিত তদন্ত কমিটি ১৯৯৭ সালের ২৭ মার্চ একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

প্রতিবেদনে আসামিরা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ-১৯৬৯ এর ১৭ ধারার ই (২) বিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। আর সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশের ২৪ ধারার অধীনে আসামিদের শাস্তি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদনে।

এমএএস/এমআরএম/পিআর