জাতীয়

কার ঘর আলো করবে সেই শিশুটি

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেলে যাওয়া সেই অবুঝ শিশু ফাতেমার ‘বৈধ অভিভাবকত্ব’ নির্ধারিত হবে আজ। ঠিক একমাস আগে গত ৮ জুলাই আনুমানিক আট মাস বয়সী ফাতেমাকে তার গর্ভধারিণী মা ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল। মায়াবী চেহারার এই শিশুটিকে সন্তান হিসেবে দত্তক পেতে ইতোমধ্যেই আদালতে আবেদন করেছেন আট দম্পতি।

Advertisement

আবেদনকারী দম্পতিদের মধ্যে সেনাবাহিনী, পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা রয়েছেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক আজ শিশুটিকে তাদের যে কারও হাতে তুলে দিতে পারেন। আর এমনটা হলে বর্তমানে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে আশ্রয় পাওয়া শিশুটির স্থায়ী ঠিকানায় নতুন জীবন শুরু হবে।

গত ২৫ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান ফাতেমার প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। সেদিন তিনি ৯ আগস্টের মধ্যে শিশুটির প্রকৃত বাবা-মাকে খুঁজে বের করার দিন নির্ধারণ করেন। তাদের খুঁজে না পাওয়া গেলে এদের যেকোনো এক দম্পতিকে বাছাইপূর্বক শিশুটির দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হতে পারে আদালত সূত্রে জানা যায়।

সেইদিন ছয় দম্পতি আদালতে শিশুটিকে নেয়ার আবেদন করেন। এরপর আরও দুই দম্পতি আবেদন করেন। আট দম্পতি হলেন ব্যবসায়ী আশিক ওয়াহিদ-শাহনাজ, পুলিশের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ-নিঝুম আক্তার, সেনাবাহিনীর তথ্য ও প্রযুক্তি ফর্মের কর্মকর্তা মাজহারুল-লায়লা নুর, ব্যবসায়ী আলমগীর-অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার, ব্যবসায়ী জামাল-শ্যামলী আক্তার, ব্যবসায়ী গোলাম সরওয়ার-দুলশাদ বেগম বিথি, ব্যবসায়ী শামসুল আলম চৌধুরী-শামিমা আক্তার চৌধুরী ও বিমান অফিসার অা ক ম আতিকুর রহমান-মনালিসা দম্পতি।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই জর্ডান থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরছিলেন জয়দেবপুর নিবাসী স্বপ্না বেগম। একই বিমানে শিশুটি ও তার মাও ফিরছিলেন। স্বপ্না জর্ডানে গৃহকর্মী হিসেবে গিয়েছিলেন। অজ্ঞাত নারীও একই কাজে সেখানে গিয়েছিলেন বলে জানতে পারেন স্বপ্না।

স্বপ্না বিমানবন্দর পুলিশকে জানান, ওই নারীও তার সঙ্গে জর্ডান থেকে একই ফ্লাইটে ফিরেছেন। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাস্টমস থেকে মালপত্র নিয়ে বের হতে বিমানবন্দরের ক্যানওপি পার্কিং এলাকায় স্বজনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন স্বপ্না।

এ সময় বিমানে পরিচয় হওয়া শিশুটির মা তাকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপা আমার শিশুটাকে একটু ধরেন। ভেতরে মালপত্র রয়েছে, নিয়ে আসছি।’ আগে কথা হওয়ায় সরল বিশ্বাসে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন স্বপ্না। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও সেই নারী আর ফেরেননি।

পরে স্বপ্না আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের কাছে ঘটনাটি জানালে তারা বিস্তারিত শোনার পর শিশুসহ স্বপ্নাকে বিমানবন্দর থানায় পাঠায়। ওইদিনই বিমানবন্দর থানায় একটি জিডি করা হয়। এরপর শিশুটিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হয়।

Advertisement

জেএ/বিএ