দেশজুড়ে

শিশু রনি ভারতের পুনর্বাসন কেন্দ্রে : দু’দেশের সাহায্য চায় বাবা-মা

কুড়িগ্রাম সীমান্ত থেকে ৫ বছরের শিশু রনিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার দেড় মাস পার হলেও ফেরত দেয়নি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এদিকে সন্তানকে ফেরত না পেয়ে পাগল প্রায় রনির বাবা-মা দু’রাষ্ট্রের সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গত ১১ এপ্রিল ভারতের আসাম থেকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় টাকিমারী ক্যাম্পের বিএসএফরা রনিকে আটক করে। বর্তমানে সে ভারতের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে।পরিবার সূত্রে জানা যায়, জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের কুরুসা ফেরুসা গ্রামের হজরত আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৩০) এবং একই ইউনিয়নের ফকিরটারী গ্রামের মৃত. জলিল হোসেনের মেয়ে রুনা খাতুনের প্রায় ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের এক থেকে দেড় বছরের মাথায় সন্তানকে নিয়ে জীবন-জীবিকার তাগিদে ভারতের দিল্লিতে ইটভাটায় কাজ করতে যান তারা।জয়নাল আবেদীন জানান, বিয়ের পর সংসারে অভাব বেড়ে যায়। তাই প্রায় ৫ বছর আগে ৩ মাসের শিশু সন্তান রনিকে নিয়ে ভারতে চলে যান তারা। দিল্লির ঝরঝর জেলার শনিপথ থানার খরগোদা গ্রামের দূর্গা নামে একটি ইটভাটায় স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করতাম। সেখানেই তাদের জান্নাতী (৪) ও জেসমিন (২)  নামে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। রনির বয়স ৫ বছর পেরিয়ে গেলে তাকে বাংলাদেশের স্কুলে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন বাবা-মা। সে অনুযায়ী আসাম প্রদেশের ধুবড়ি এলাকার টাকিমারী সীমান্ত দিয়ে দালাল মইনুদ্দিনের মাধ্যমে রনিকে দেশে তার দাদা-দাদীর কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।গত ১১ এপ্রিল সীমান্ত পার হওয়ার সময় টাকিমারী ক্যাম্পের বিএসএফের হাতে আটক হয় রনি। এসময় দালাল মইনুদ্দিন কৌশলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে রনির দাদা হজরত আলী কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি’র অধীন চৌদ্দকুড়ি বিজিবি ক্যাম্পে শিশু আটকের ঘটনা জানালে আটক রনিকে ফেরত চেয়ে টাকিমারী বিএসএফ ক্যাম্পে চিঠি পাঠায় বিজিবি। পত্রের প্রেক্ষিতে কয়েকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও শিশু রনিকে ফেরত দেয়নি বিএসএফ। রনিকে আটকের খবর শুনে মাস খানেক আগে দেশে ফিরে বিজিবি’র দ্বারে-দ্বারে ঘুরলেও এখন পর্যন্ত তার সন্তান রনিকে ফেরত পাবার কোনো খবর পাচ্ছে না তার বাবা-মা।বিজিবি’র লাইনম্যান রশিদ জানান, প্রায় একমাস আগে রনির বাবা-মায়ের রক্ত টাকিমারী ক্যাম্পের বিএসএফ নিয়ে গেছে। তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান বিষয়টি উপর মহলে চলে গেছে আমাদের কিছু করার নেই। অনেক চেষ্টা করেও আমরা আনতে পারছিনা।কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি’র পরিচালক জাকির হোসেন ঘটনা স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে শিশু রনি ভারতের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রয়েছে বলে বিএসএফ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সেখানে সে ভালোই আছে। বিএসএফ আমাদের কাছ থেকে রনির বাবা-মায়ের নাগরিকত্বের পরিচয় পত্র এবং রক্ত নিয়েছে নিশ্চিত হবার জন্য। আমরা শিশু রনিকে বাংলাদেশে ফেরত আনার জন্য চেষ্টা করেছি এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।এমএএস/আরআইপি

Advertisement