অজানা রোগে আক্রান্ত তিন বছরের শিশু পল্লব চন্দ্র সরদারকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১টার দিকে নওগাঁ সিভিল সার্জন রওশন আরা খানমের উদ্যোগে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৯নং বেডে তাকে ভর্তি করা হয়। পল্লবের সঙ্গে তার মা প্রার্থনা রানী ও ফুফু রয়েছেন।
Advertisement
নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এমদাদুল হক বলেন, রোগটি পুরোপুরি ভালো হবে এমন নিশ্চয়তা দেয়া যাবে না। তবে শিশুটি যাতে একটু আরাম ও শান্তিতে থাকতে পারে এ ব্যবস্থা করা যাবে। তবে উন্নত ডায়াগনিসিস করার জন্য ঢাকায় নেয়া হতে পারে।
নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা. রওশন আরা খানম বলেন, পল্লবকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসে নওগাঁ সদর হাসপাতালে শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা দেখছেন।
এটি একটি জন্মগত রোগ। এর নাম ‘Cong Ichthyosiforn Erythroderme’। এ রোগ নিরাময়যোগ্য না। আমরা সবাই মনে করছি শিশুটিকে কয়েকদিন হাসপাতালে রেখে দেখব। যেহেতু শিশুটি অপুষ্টিতে ভুগছে সেহেতু তাকে ভিটামিন ও পুষ্টিকর খাবার এবং সঙ্গে মলম দেয়া হয়েছে। এতে যদি কোনো উন্নতি না হয় সেক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিজ উদ্যোগে ঢাকায় পাঠাব।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, এটি স্কিনজনিত সমস্যা। ভালো করে কথা বলতে, খেতে ও হাটতে পারে। এছাড়া বিষয়টি মহাপরিচালকেও জানানো হয়েছে। যেহেতু শিশুটির দায়িত্ব আমি নিয়েছে। সবসময় তার খোঁজখবর রাখব।
উল্লেখ্য, জেলার বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে আদিবাসী সুরেশ সরদারের ছেলে পল্লব চন্দ্র সরদার। পেশায় তিনি বেসরকারি কোম্পানির ক্যাভার্ড চালক। পল্লবের জন্মের পর থেকেই গায়ের চামড়া কুচকানো। পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত শরীর চামড়া যেন সাপের চামড়ার মতো দাগ কাটা। এরপর যতোই দিন যায় গায়ের চামড়া শক্ত হয়ে অস্থিরতা বাড়তে থাকে। নির্দিষ্ট সময় পর সাপের মতো চামড়া পরিবর্তন হয়ে পাতলা ও প্রতিটি দাগ থেকে রস বের হয়। শরীর থেকে প্রচুর তাপ বের হওয়ায় ঠান্ডা পরিবেশে এবং মাঝে মধ্যে নলকুপের ঠান্ডা পানিতে গামছা ভিজিয়ে সমস্ত শরীর মুছে দিতে হয় ও ভেজা গামছা পেচিয়ে রাখতে হয়। এতে কিছুটা আরাম বোধ করে। বিভিন্ন ডাক্তার ও কবিরাজী চিকিৎসা দেয়া হলেও অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি।
পল্লবকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নওগাঁ সিভিল সার্জন তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নেন।
পল্লবের মা প্রার্থনা রানী বলেন, আশা করছি ছেলের উন্নত চিকিৎসা হলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার কামনা করেন তিনি।
Advertisement
আব্বাস আলী/এমআরএম/এএইচ