অর্থনীতি

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের আরও অর্থায়ন

চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে চলমান ‘চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন’ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক আরও ৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার ঋণ দিয়েছে। এজন্য সংস্থাটির সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামের সাড়ে ৬ লাখ মানুষ উপকৃত হবে।

Advertisement

রোববার এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) মধ্যে একটি চুক্তি হয়। চুক্তিতে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম ও বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের অপারেশন ম্যানেজার রাজশ্রী এস পারালকার স্বাক্ষর করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মাহমুদা বেগম বলেন, চলমান এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামের পানির চাহিদা পূরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আরও অর্থের প্রয়োজন হওয়ায় বিশ্বব্যাংক এ অতিরিক্ত অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের বিশেষ করে বস্তি ও পাহাড়ের ওপর বসবাসকারী সাধারণ মানুষকে সুপেয় পানির আওতায় আনতে কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ অতিরিক্ত অর্থায়নে পানি সরবরাহের নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করা, সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য বুস্টার পাম্প স্টেশনের উন্নয়ন, চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ পাশের পানি সরবরাহ লাইনের দিক পুনর্নির্ধারণ এবং বিনিময় হার পরিবর্তনজনিত ঘাটতি পূরণ করা হবে।

Advertisement

রাজশ্রী এস পারালকার বলেন, অতিরিক্ত অর্থায়নসহ প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংকের মোট অর্থায়ন ২১ কোটি ৮৫ লাখ ডলারে দাঁড়াচ্ছে। প্রকল্পটি শেষ হলে আরও ৬৫ হাজার নতুন লাইন নির্মিত হবে। এর ফলে চট্টগ্রাম শহরের আরও অনেক মানুষ নিরপাদ পানির আওতায় আসবে।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রার (এসডিজি) ষষ্ঠ লক্ষ্য হচ্ছে দেশের সকল মানুষকে নিরাপদ পানির আওতায় নিয়ে আসা। তাই এ প্রকল্পটি এসডিজি বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন শহরে মাত্র অর্ধেক জনগোষ্ঠী পাইপলাইনে পানির সুবিধা পাচ্ছে। তাছাড়া স্যানিটেশন ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থাও পর্যাপ্ত নয়। চট্টগ্রামের এই চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাংকও তাদের সহায়তা বাড়াচ্ছে। এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে শহুরে বস্তি এলাকাও সুবিধা পাবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মধুনাঘাট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও পতেঙ্গা বুস্টার পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এর সঙ্গে কালুরঘাট পানি সঞ্চালন ব্যবস্থা উন্নয়ন করা হবে। বাড়তি এই অর্থায়নের মাধ্যমে নতুন করে ১০ হাজার পাইপলাইনে পানির সংযোগ স্থাপন করা হবে এবং ১৭ হাজার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হবে।

বিশ্বব্যাংক সূত্র জানায়, ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সাড়ে ৬ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সুবিধার আওতায় এসেছে। এরপরও শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেসঙ্গে চাহিদা বেড়ে চলছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে শহরাঞ্চলের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

Advertisement

উল্লেখ, প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়তি এই ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে এই প্রকল্পে সর্বমোট ২১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে ৩৮ বছরে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

এমএ/জেডএ/আরআইপি