কক্সবাজার সদর উপজেলার উপকূলীয় পোকখালী ইউনিয়নের মধ্যম পোকখালীর ফকিরপাড়ায় ডজন খানেক `রহস্য গর্তে`র সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব গর্ত নিয়ে এলাকাবাসীর মনে কৌতুহলের পাশাপাশি আতঙ্কও বিরাজ করছে। কি কারণে হঠাৎ এসব গর্ত সৃষ্টি হয়েছে এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেকে একে ভূমি ধসের পূর্ব লক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন। এ লক্ষণের কথা প্রচার পাওয়ায় নেপালের পরিণতি আসছে কিনা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, গত সপ্তাহ দেড়েক আগে ফকির পাড়া বায়তুল হামদ মসজিদের পূর্ব-পশ্চিম দিকে ছোট ও বড় আকারের ১০টি রহস্য গর্ত দেখা যায়। যা দেখতে এক প্রকার গুহার মুখের মতো। একেকটি গর্তের প্রস্থ ৮-১০-৩-৫ফিট। অনেক গর্তের গভীরতা অনুমানিক ১৫-২০ফিট। এসব গর্ত দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গর্তগুলোর নিখুঁত আকৃতি একে প্রাকৃতিক সৃষ্টি বলে ধারণা দিচ্ছে। স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ মাওলানা ছব্বির আহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, গত ১৫ দিন আগে বেশ কিছু সময় বৃষ্টি হয়। এরপর হঠাৎ গভীর গর্তগুলো সবার নজরে আসে। গত কয়েকদিন আগের বৃষ্টিতে দেখা যায় পানি গর্তে ঢোকা মাত্রই কোথায় যেন চলে যায়। মসজিদের পশ্চিমে গর্তটি এলাকাবাসী মাটি দিয়ে তা ভরাট করে দিয়েছিল। কিন্তু তা আবারও দেবে গিয়ে আগের অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, চাষি জমি ও জন চলাচলের পথের পাশে সৃষ্ট এসব গর্ত সবার মাঝে একটি আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ফলে সন্ধ্যার পর লোক চলাচল এক প্রকার বন্ধ থাকছে। একই এলাকার আমির হোসেনদের বাড়ির পাশেও দুটি গর্তের উদয় হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ৪০ বছরের জীবনে এলাকায় এ ধরনের সুড়ঙ্গ কোনো দিন দেখিনি। বাড়ির লোকজনের কথা কী বলব, আমি নিজেও ভয় পাচ্ছি আসলে এটি কিসের গর্ত! স্থানীয়রা জানান, দিনের বিভিন্ন সময়ে এলাকার সব বয়সী মানুষ গর্তগুলো এক নজর দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। সবারই একই কথা ইতোপূর্বে এ ধরনের গর্ত এলাকার কারো চোখে পড়েনি। নাইক্ষ্যংদিয়া এস.টি দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও ফকিরপাড়ার বাসিন্দা মাওলানা রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ইতোপূর্বে রাশিয়ার একটি অঞ্চলেও অনুরূপ রহস্যজনক গর্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। যা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখনকার সময়ে এটি গণমাধ্যমেও ছিল আলোচনার বিষয়।তিনি আরো বলেন, এটি ভূমি ধসের নমুনা বলে মনে করছেন বয়োবৃদ্ধরা। একটি নয়, একে একে ডজনখানেক রহস্য গর্ত দেখে সত্যি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন পাড়ার লোকজন। বয়োবৃদ্ধদের ধারণা প্রচার পাবার পর নেপালের পরিণতি আসছে কিনা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন সময় পার করছেন সবাই। তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদারকি করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মৌলভী ফরিদুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) শহিদুল ইসলাম বিষয়টি শনিবার সন্ধ্যায় শুনেছেন দাবি করে জাগো নিউজকে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়কে মৌখিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছি। কোন বিভাগ এসব বিষয়ে বিজ্ঞ তা খোঁজ নেয়া হচ্ছে। যোগাযোগ করা হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগেও। রোববার গর্তগুলোর ভিডিও এবং স্থিরচিত্রসহ স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অফিসে আসার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদারকি করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান আসার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাব।সায়ীদ আলমগীর/এমজেড/এমএস
Advertisement