রাজনীতি

‘সরকার ষোড়শ সংশোধনী সংশোধন করলে ভুল করবে’

বাতিল হওয়া ষোড়শ সংশোধনী সংশোধনের পথ অনুসরণ করলে সরকার ভুল করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী বলেছেন ষোড়শ সংশোধনী যতবার বাতিল করা হবে, ততবার সংসদে পাস করা হবে। যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর কথা। কারণ এতে প্রমাণ হয় সুপ্রিম কোর্ট ও বিচার বিভাগের ওপর এই সরকারের আস্থা নেই। তারা (সরকার) বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।’

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনঃ প্রয়োজন রাজনৈতিক ঐক্য’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।

‘নাগরিক ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহিল মাসুদ।

Advertisement

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে তারা বিচার বিভাগের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে, তাহলে সরকার হেরে যাবে। কেননা অতীতেও যারা বিচার বিভাগের ওপর হাত দিয়েছে, তাদের হাত পুড়ে গেছে। কাজেই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় শুধু ঐতিহাসিক নয় বরং দেশের ১৬ কোটির মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন। এই রায় এখন জাতীয় দলিল। ফলে যারা এই রায়ের অবমূল্যায়ন করতে চান কিংবা উদ্যোগ নেন তাহলে অনুশোচনা করবেন এবং এতে করে সরকারের পতন আরও দ্রুতগতিতে হবে।’

সরকার আগামী নিবাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়ে বিরোধীদলের ওপর ষড়যন্ত্র ও নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন। এটা আদালত অবগত রয়েছেন। অথচ এ নিয়ে শুরু হয়েছে ষড়যন্ত্র। সরকার থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নিয়ে নানান ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। তাদের হুঁশিয়ারি দিতে চাই- ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে দুর্বল করা যায়নি বরং বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে।’

দেশে গণতন্ত্র ও রাজনীতি নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদলের মহানায়করা যারা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারা যদি তাদের এলাকায় আমাদের (বিএনপি) ঘরোয়া পরিবেশে হলেও বৈঠক করার সুযোগ না দেন; তাহলে তাদের কাছ থেকে কী করে গণতন্ত্র আশা করা যায়।’

নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। এদের অধীনে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এরা নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। তাই নির্বাচন কমিশনকে বলব- যদি নির্বাচনী পরিবেশ, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে সাহস না পান তাহলে পদত্যাগ করুন।’

Advertisement

সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এক বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হবে, এটা সত্য। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সেই নির্বাচনে অংশ নেবে এটাও সত্য। আরেকটি সত্য হচ্ছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না। কারণ দলীয় সরকার ও শেখ হাসিনার অধীনে যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে না, তার প্রমাণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন।’

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাসুজ্জামান দুদু, গণফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মো. মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।

এমএম/এসআর/এমএস