ধর্ম

হজ পালনে নারীদের করণীয়

আল্লাহ তাআলা হজকে মানুষের জন্য ফরজ করেছেন। তবে তা শর্ত সাপেক্ষে ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর এ ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ রয়েছে এ ঘর পর্যন্ত পৌছার। (সুরা আল ইমরান : আয়াত ৯৭) সামর্থ হলো- শারীরিক সক্ষমতা, আর্থিক সঙ্গতি এবং মানসিক প্রস্তুতি থাকা।

Advertisement

যার শারীরিক সক্ষমতা নেই কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি আছে সে ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে দিয়ে হজ করানো ওয়াজিব।

নারীর হজনারীদের ওপরও হজ ফরজ। যদি ওই নারীর আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা থাকে। তবে নারীর হজ আদায়েল ক্ষেত্রে রয়েছে একটি অতিরিক্ত শর্ত। যা পালন করা সাপেক্ষে নারীর ওপর হজ আদায় করা ফরজ। আর তাহলো নারীর হজ আদায়েল জন্য মাহরাম আবশ্যক।

যদি সমগ্র জীবনে মাহরাম না পায়; তাতেও তার পক্ষে স্বশরীরে গিয়ে হজ আদায় করার অনুমতি নেই। তবে নারীদের হজ আদায়ে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ করণীয়। যা তুলে ধরা হলো-

Advertisement

>> বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত অবস্থায় হজস্বামীর মৃত্যুর পর ইদ্দত পালন অথবা তালাকের ইদ্দত পালনকারিণী নারীর জন্য হজে যাওয়ার অনুমতি নেই। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যাবে, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন অপেক্ষা করবে।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৩৪)

ইদ্দত শেষ হলে পরের বছর (সামর্থ্য থাকলে) হজ করতে পারবে। তবে হজের টাকা জমা দেয়ার পরে যদি স্বামী মারা যায় তবে সম্পদ রক্ষার্থে ও সম্পদের অপচয় রোধে একদল ইসলামিক স্কলারের মতে, ইদ্দত অবস্থায়ও হজ করার অবকাশ রয়েছে। (দুররুল মুখতার)

ঋতুকালীন অবস্থায় হজমাসিক ঋতুবর্তী ও প্রসূতি নারীর জন্য গোসল করে হজের ইহরাম বাঁধা জায়েজ। হানাফি ও শাফেয়ি মাজহাবসহ অধিকাংশ আলেমের মতে, রক্তস্রাব ও প্রসূতি নারীদের ইহরাম বাঁধার আগে গোসল করা মুস্তাহাব।

গোসল করা সম্ভব না হলে বা অসুবিধা বোধ করলে অজু করবে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে-হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আসমা বিনতে উমায়স রাদিয়াল্লাহু আনহা (হজ পালনের জন্য) জুলহুলায়ফা নামক স্থানে (এসে) আবু বকরের পুত্র মুহাম্মাদকে প্রসব করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকরের মাধ্যমে তাকে গোসল করে ইহরাম বাঁধার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম)

Advertisement

ঋতুবর্তী ও প্রসূতিকালীন সময়ে নারীরা বাইতুল্লাহ তাওয়াফ ব্যতিত হজের সব কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। কারণ পবিত্র কাবা শরিফে অবপবিত্র অবস্থায় প্রবেশ করা নিষেধ।

নারীদের ঋতুস্রাব ও প্রসূতিকালীন সময় শেষ হলে পবিত্রতা লাভের পর বাইতুল্লায় তাওয়াফ আদায় করে নিবে।

তবে হজ পালনের জন্য নারীরা ওষুধের মাধ্যমে মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ রেখেও হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। তবে এমনটি করা নিষ্প্রয়োজন।

সুতরাং নারীদের হজ ও ওমরা পালনে মাহরাম ব্যক্তির র্শত পূরনের পাশাপাশি উল্লেখিত বিষয়সমূহের প্রতি যথাযথ দৃষ্টি রাখা উচিত। আল্লাহ তাআলা হজের ইচ্ছা পোষণকারী নারীদেরকে হজ পালনে করণীয় বিষয়গুলোর প্রতি যথাযথভাবে যত্নবান হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস