সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেছেন, চেতনা আর জাগরণের ধারক বই। আমাদের বুঝার জন্য, চারপাশকে বুঝার জন্য, সবাইকে বইয়ের কাছে যেতে হয়। বই আমাদের বিবেক জাগ্রত করে। কারণ, আল্লাহর কাছ থেকে যে অহি এসেছে সে অহি-ই হলো বহি। আর বহি থেকে বই। বইয়ের পবিত্রতা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজারের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে সপ্তাহব্যাপী কক্সবাজার বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেছেন। সৈয়দ শামসুল হক বলেন, বইকে দেশের আনাচে কানাচে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তখন দেখা যাবে মানুষ বই পড়ছে, বই প্রেমী হচ্ছে। এভাবে বাড়বে বই বিক্রিও। যখন লেখকরা দেখেন মানুষ তার অবসর সঙ্গী হিসেবে বই কিনছে, তখন তাদের মন ভরে যায়। তবে বই মেলা থেকে বই কিনতে হবে এমন কিন্তু কথা নেই। বই আমরা পথেঘাটেও পেতে পারি।কক্সবাজার সম্পর্কে বলতে গিয়ে সৈয়দ শামসুল হক বলেন, কক্সবাজারকে ফেলে রাখার মত জায়গা নয়। এটি প্রথম শ্রেণির শহর। এখানকার অধিবাসিদের মাঝে সাংস্কৃতিক চাহিদা বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, বই যেন মানুষের হৃদয় থেকে হারিয়ে না যায়, মুছে না যায় সে আশা-ই করবো। বিকেল ৫টার দিকে কবি যখন সভাস্থলে ঢুকছিলেন তখন মাইকে আবৃত্তি করা হচ্ছিল তাঁর ‘আমার পরিচয়’ কবিতাটি। এ প্রসঙ্গ টেনে কবি বলেন, জীবনে অনেক অনুষ্ঠানে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে, কিন্তু নিজের কবিতায় অভ্যর্থনা আজ কক্সবাজারেই পেলাম। যা বাকি জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটিসি) শাহ হাবিবুর রহমান হাকিম, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গণি। বক্তব্য রাখেন, মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিতসহ স্থানীয় কবি সাহিত্যিকগণ। মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব জানান, মেলায় বই বিক্রয়ে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেলায় বই বিক্রয় ছাড়াও প্রতিদিন সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক ও কবি, সাংবাদিকদের আড্ডার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর এ মেলা চলবে ৫ জুন পর্যন্ত। তিনি আরো জানান, ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এছাড়া শুক্রবারসহ অন্য ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।জেলা প্রশাসন এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত ‘চেতনার জাগরণে বই’-স্লোগানে আয়োজিত বই মেলায় ঢাকার ৩৮টি এবং কক্সবাজারের দুটিসহ মোট ৪০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। মেলায় কক্সবাজারের সকলকে অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিত ও মেলার পরিচালক শিহাব উদ্দিন ভূঁইয়া। সায়ীদ আলমগীর/এআরএ/আরআইপি
Advertisement