দেশজুড়ে

তুফানদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি কোনো আইনজীবী

বগুড়ায় ছাত্রী ধর্ষণ ও পরে মা-মেয়েকে ন্যাড়া করে নির্যাতনের মামলার ঘটনার মূল হোতা তুফান সরকার তার স্ত্রী আশা ও শাশুড়ি রুমা বেগমসহ আসামিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি কোনো আইনজীবী।

Advertisement

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামসুন্দর রায়ের আদালতে আসামিদের হাজির করে রিমান্ড আবেদন জানান।

পরে ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামসুন্দর রায়ের অনুমতি নিয়ে তুফান সরকারের শাশুড়ি রুমা বেগম আদালতে কথা বলার অনুমতি চেয়ে ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন।

এদিকে গতকাল বুধবার রাতে রিমান্ড শুনানির দ্বিতীয় দিনে পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর (৪, ৫, ৬) মারজিয়া হাসান রুমকির বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।

Advertisement

এ সময় তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ি থেকে তরুণী ও মাকে নির্যাতন করে ন্যাড়া করে দেয়ার আলামত উদ্ধার করা হয়। শিগগিরই আলোচিত এই মামলাটির চার্জশিট দেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আদালত সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। পরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামসুন্দর রায়ের অনুমতি নিয়ে তুফান সরকারের শাশুড়ি রুমা বেগম আদালতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

এ সময় আদালতে তিনি জানান, তার জামাই তুফান সরকার পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এই ক্ষোভ থেকে তিনিসহ তার মেয়েরা ওই তরুণী ও তার মায়ের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন। তাদের নির্দেশে মা-মেয়েকে নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

একই সঙ্গে ওই তরুণীকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তুফান সরকার। আদালতে তিনি জানিয়েছেন, ওই তরুণীকে তিনি ভালোবাসেন। তার স্ত্রী এবং অন্যরা মেয়েটির ওপর যে হামলা চালিয়েছে এটি তিনি জানতেন না।

Advertisement

আদালত আসামিদের কথা শুনে তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনার নায়ক তুফান সরকার এবং তার সহযোগী মুন্নাকে পুনরায় দুদিনের এবং তার স্ত্রী আশা খাতুন এবং শাশুড়ি রুমা বেগমকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে কাউন্সিলর রুমকি পুলিশকে অনেক তথ্য দেনে। সে সূত্র ধরে বুধবার রাতে অভিযান চালানো হয় শহরের চকসূত্রাপুর এলাকায় রুমকির বাড়িতে।

সেখান থেকে পুলিশ ওই তরুণী এবং তার মার মাথার কাটা চুল, কেচি, মারপিট করার কাজে ব্যবহৃত স্টিলের পাইপ, ক্ষুর এবং মাথা ভেজানোর কাজে ব্যবহৃত সাবান উদ্ধার করা হয়। চুলকাটা এবং নির্যাতনের ঘটনার চিত্রটি ধারণ করা হয়েছিল ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকির মোবাইল ফোন থেকে। আলামত হিসেবে সেগুলো উদ্ধার করেছে পুলিশ।

একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকির নিজ নামের প্যাডে জোর করে মিথ্যা চুরি করার স্বীকারোক্তি আদায়ের কাগজটি। রুমকি পুলিশকে আরও জানিয়েছেন, কেটে ফেলা চুলের একটি অংশ তিনি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছেন।

লিমন বাসার/এএম/জেআইএম