কোমরে জোড়া লাগানো জমজ শিশু তৌফা ও তহুরার নানার বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে আনন্দের বন্যা বইছে। সেই সঙ্গে উচ্ছ্বাসিত গ্রামের সব মানুষ। শিশু দুটির খোঁজ নেয়ার জন্য অনেকে বারবার আসছেন ওই বাড়িতে।
Advertisement
বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই। নানা সহিদুল ইসলাম ঢাকায় তৌফা ও তহুরার সঙ্গে। আর নানি সখিনা বেগম বাড়ির বাইরে।
পরে সাংবাদিক আসার খবর দেয়া হলে তিনি কিছুক্ষণ পরই চলে আসেন। ততক্ষণে আশপাশের বিভিন্ন বাড়ি থেকে অনেক মানুষ এসে জড়ো হয়।
তারা এই প্রতিবেদকের কাছে তৌফা ও তহুরার সর্বশেষ খবর জানতে চাইলে প্রতিবেদক মুঠোফোনে জাগো নিউজ থেকে তাদের সর্বশেষ খবর জানান।
Advertisement
তৌফা ও তহুরাকে আলাদা করা হয়েছে এ খবর নানি সখিনা বেগম মুঠোফোনে শুনেছেন। কিন্তু অপারেশনের পর চোখে দেখেননি নাতনিদের। পরে তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে ছবি দেখতে চান। পরে প্রতিবেদক মুঠোফোনে তৌফা ও তহুরার ছবি দেখান। আশপাশের শিশু ও নারীরাও ভিড় করে ছবিটি দেখার জন্য।
সখিনা বেগম বলেন, নাতনিদের দেখার জন্য মনটা আনচান করছিল। অনেক দূরে গিয়েছিলাম টিভিতে ছবি দেখার জন্য, কিন্তু গিয়েও দেখতে পাইনি। আমার দুই নাতনিকে অপারেশন করে আলাদা করা হয়েছে। এ খবর শুনে আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তৌফা ও তহুরার খবর নিতে আশপাশের মানুষ এসেছে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। আমি সবসময় চাই ওরা যেন ভালো থাকে।
তৌফা ও তহুরার মামী মর্জিনা বেগম বলেন, খবরটি শুনে ভালো লাগছে। ওরা দুইজন এখন শান্তিতে থাকবে। আগে তৌফা ও তহুরাকে দেখভাল করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। ওরাও খুব কষ্ট পেয়েছে। এখন ওরা ভালো থাকবে। ওদের গোসল করাতে তিন থেকে চারজন মানুষ লাগতো।
Advertisement
প্রতিবেশী মো. ফুল মিয়া (৫০) বলেন, সবাই রাতদিন আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। শিশু দুইটি যেন সুস্থ থাকে। ওরা সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক এটাই আমাদের কাম্য।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় নানার বাড়িতে জন্ম হয় তৌফা ও তহুরার।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক দল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাদের আলাদা করা হয়েছে।
রওশন আলম পাপুল/এএম/এমএস