রৌমারী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ করে দিয়েছে এবারের বন্যায়। বন্যার পানির তীব্র স্রোতে উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়কের প্রায় অর্ধশত স্থানে ভেঙ্গে গেছে। এলাকাবাসি নিজেদের প্রয়োজননেই ওই ভাঙ্গা স্থানে বাঁশের সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাঁশের ওই সেতু এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দেখা দিয়েছে।নড়বড়ে ওই সব বাঁশের সেতু পার হচ্ছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এতে বেশি সমস্যায় পড়ছে স্কুলের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীসহ বৃদ্ধরা। কোথাও কোথাও বাঁশের সেতু পারাপারে জনপ্রতি ২ টাকা ও সাইকেল প্রতি ৫ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়া রৌমারী-রাজীবপুর সড়কে শিবেরডাঙ্গী নামক স্থানের ক্ষতস্থান ভরাট না হওয়ায় এখন বন্ধ রয়েছে রৌমারী-ঢাকা রুটে সকল প্রকার যানবাহন।রৌমারী এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় উপজেলার ১০ কিলোমিটার কাচা সড়ক, ৩কিলোমিটার পাকা সড়ক, অর্ধশত ব্রিজকালভার্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের অধিনে গ্রামীন রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার অভ্যন্তরীন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে বাঁশের সেতু। উপজেলা শহর থেকে ইউনিয়ন ও গ্রামে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সড়ক যোগাযোগের চরম দুরাবস্থার কারনে জনসাধারনকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।আরও জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ও ইউনিয়ন পরিষদের অধিনে বিভিন্ন সড়ককের ব্রিজ কালভার্ট ও রাস্তাঘাট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সড়ক ও রাস্তায় অর্ধশত ভাঙ্গা স্থানে বর্তমানে বাঁশের সেতু রয়েছে। যেখানে এখনও বন্যার সময় পানি জমে আছে। ওই সব বাঁশের নড়বড়ে সেতুর স্থানে জরুরী ভিত্তিতে পাকা ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ না করলে সাধরণ মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে।সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাওয়ার গ্রাম, পশ্চিম মাদারটিলা, চুলিয়ারচর, বড়াইবাড়ি, বড়াইবাড়ি বিডিআর ক্যাম্প সংলগ্ন, বামনের চর, নটানপাড়া, ইজলামারী, নওদাপাড়া, বেহুলারচর, বোয়ালমারী, চেংটাপাড়া, চরেরর গ্রাম, গয়টাপাড়া, উত্তর বোয়ালমারী, বাইমামারী, বিকরীবিল, লালকুড়া, বকবান্দা, বকবান্দা উত্তরপাড়া, দুবলাবাড়ি, দক্ষিন আলগারচর, পুড়ারচর, ধর্মপুর, দক্ষিন টাপুরচর, পাখিউড়া, দক্ষিন ফুলুয়ারচর, ঝগড়ারচর, হরিনধরা, কাজাইকাটা, খড়ানিরচর, ছোটধনতলা, খাটিয়ামারী, খেদাইমারী, ইটালুকান্দা, ডিগ্রিরচর, ঝাউবাড়ী, নতুন বন্দর, চর শৌলমারী, নতুনবন্দর, নমদাসপাড়া, চর লাঠিয়ালডাঙ্গা নামক স্থানে বাঁশের সেতু রয়েছে।স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন জানান, এমনিতেই রৌমারী উপজেলার অভ্যন্তরীন সড়ক যোগাযোগ ভঙ্গুর থাকার কারনে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটছে না। এবারের বন্যায় আরো তছনছ করে দিয়েছে সড়কগুলো। উপজেলা শহরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলে এর সুফল পায় না সাধারণ মানুষ। যোগাযোগের অভাবে সময় মতো হাসপাতালে আনতে না পেরে অনেকের মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে।রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মোবারক হোসেন উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজকালভার্ট এবং যেসব ভাঙ্গাস্থানে পাকা সেতু নির্মাণ সেগুলোর প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করেছি এবং তা জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেছি।
Advertisement