বিবিধ

আগস্ট ষড়যন্ত্র আজও সক্রিয়

ঘাতকের নিশানা ছিল মুজিব পরিবারকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। শুধু নিশ্চিহ্নই নয়, ছিল জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন একেবারেই মূলোৎপাটন করা। নকশাও ছিল নিখুঁত। যে বেলায় আঘাত হানলে বুলেটের নিশানা ভুল হবে না, ঠিক সে বেলাই বেছে নেয় তারা। তাই তো খুনিদের বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি শিশু রাসেলও।

Advertisement

ষড়যন্ত্রকারীদের লক্ষ্য ছিল রাজনীতির মাঠ থেকে বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরীদেরও বিদায় করে দেয়া। যে ষড়যন্ত্রের থাবা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

দেশে না থাকায় ১৫ আগস্টের নির্মমতা থেকে রক্ষা পা্ন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহনা। নিখুঁত ছকের মাঝেও তাদের বেঁচে থাকা ছিল ওই সময়ের জন্য একটি মিরাকল।

১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। একই বছর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

Advertisement

দেশে ফেরার পরই শেখ হাসিনার চলাচলের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার। দেশে ফেরার প্রথম দিন নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে তাকে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে পর্যন্ত যেতে দেয়া হয়নি। ঝড়ো বৃষ্টির সেইদিনে তাকে আশ্রয় নিতে হয় ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের বাসায়।

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক পরিধি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার জীবনও হুমকির মুখে পড়ে। তার ওপর প্রথম প্রকাশ্যে হামলা হয় ১৯৮৮ সালের ২২ জানুয়ারি। ওইদিন শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। সেখানে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। এতে আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। প্রাণে রক্ষা পান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ১৯বার হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র ছিল ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। ওইদিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জঙ্গি ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী এক জনসভায় বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। বক্তব্য শেষ হতেই তার ওপর অতর্কিত গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

ওইদিনের গ্রেনেড হামলায় মারাত্মক আহত হন তিনি। প্রাণে বেঁচে গেলেও দলের ২৬ নেতাকর্মী নিহত হন। মারা যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমান।

Advertisement

এর আগে তাকে হত্যার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র করা হয় ২০০০ সালে। ওই বছর ২০ জুলাই টুঙ্গিপাড়ার কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পেতে রাখা হয়। যদিও বোমাটি বিস্ফোরণ হওয়ার আগেই ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নন, তার পুত্র ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কেও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জয়কে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আমেরিকা প্রবাসী বিএনপির এক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন নামের ওই ব্যক্তি বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ-সভাপতি ছিলেন। হত্যা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ওই ব্যক্তিকে তিন বছরের সাজা দিয়েছে।

এএসএস/এমএআর/বিএ