অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী ২০১৬ সালে কমপক্ষে একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের এক জরিপে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ২০১৫-১৬ সালে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন-হয়রানির বিষয়ে জানতে ওই জরিপ পরিচালনা করা হয়।
Advertisement
জরিপে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২০১৬ সালে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ২০১৫ অথবা ২০১৬ সালের কোনো অনুষ্ঠানে প্রায় ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন কমপক্ষে একবার।
অস্ট্রেলিয়ার এই মানবাধিকার সংস্থা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুরুষদের তুলনায় নারী শিক্ষার্থীরা বেশি লাঞ্ছিত অথবা হয়রানির মুখোমুখি হয়েছেন। যৌন হয়রানি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের বড় ধরনের এই জরিপকে দেশটিতে মাইলফলক হিসেবে বলা হচ্ছে।
যৌন বৈষম্য কমিশনার কেট জেনকিনস বলেন, প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরক্তিকর জীবনের ছবি চিত্রিত হয়েছে। তিনি বলেন, এটা শেখাচ্ছে যে, শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতন, যৌন হয়রানির এই অভিজ্ঞতা তাদের শিক্ষাগত, সামাজিক এবং আবাসিক জীবনের একটি সাধারণ অংশ।
Advertisement
‘দুঃখজনক হলো, এসব অভিজ্ঞতার বিধ্বংসী প্রভাব রয়েছে এবং এটি জীবনকেও পরিবর্তন করে দিতে পারে। স্বাস্থ্য, পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।’
উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান
অস্ট্রেলিয়ার ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩১ হাজার শিক্ষার্থীর ওপর চালানো ওই জরিপে দেখা যায়, যৌন নিপীড়ন ও হেনস্তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন মাত্রায় সংঘটিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে অথবা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে অথবা অনুমোদনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এসব যৌন হয়রানির ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কারো না কারো কাছে ইন্টারনেটেও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জেনকিনস বলেন, যৌন হয়রানির শিকার প্রতি পাঁচজনের একজন বলেছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত অথবা সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে কলেজে যৌন হয়রানির ঘটনা একটি বিশেষ উদ্বেগজনক এলাকা। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে; যারা পুরুষদের চেয়ে চারগুণ বেশি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
Advertisement
জরিপে দেখা যায়, যৌন হামলার শিকার ৫১ শতাংশ এবং হেনস্তার শিকার ৪৫ শতাংশই অপরাধীদের চিনতেন। এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ অপরাধীই ছিল পুরুষ।
কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পিটার হজ বলেন, এই পরিসংখ্যান খুবই উদ্বেগজনক। বিশ্ববিদ্যালয় অথবা সমাজে অগ্রহণযোগ্য এ ধরনের আচরণের কোন স্থান নেই।
সূত্র : বিবিসি। এসআইএস/পিআর