অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘এজলাসে বসে কথা বলার বিষয়ে কিছু মন্ত্রী বিচারপতিদের সমালোচনা করছেন। এটা কি ফেয়ার?’
Advertisement
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা সংক্রান্ত আপিলের শুনানিতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাকে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
অ্যাটর্নি জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা প্রধান বিচারপতি ও কোর্টের স্বাধীনতা খর্ব করতে করতে এমন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন, আমরা কি কিছুই বলতে পারব না? আমরা কি কোর্টে বসে মন্তব্য করতে পারব না?’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জাজদের মধ্যে ডিভিশন সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। আমরা কি কোর্টে বসে মন্তব্য করতে পারব না? কিছু কিছু মন্ত্রী এজলাসে বসে কথা বলার বিষয়ে মন্তব্য করেন। এটা কি ফেয়ার? আপনাকে প্রশ্ন করছি।’
Advertisement
প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘দুদিক থেকে বক্তব্য আসে। বক্তব্য মিডিয়া লুফে নেয়।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনি কেন এ কথা বলছেন? বিচারে আমরা পলিটিক্যাল মন্তব্য দেই না। বিচার বিভাগ সংক্রান্ত বক্তব্য দেই। বিচার বিভাগে যখন যে ইস্যু চলে আসে। যেমন আজকে মোবাইল কোর্ট সম্পর্কে। না বললে কি থাকল, মাসদার হোসেন মামলা। আমরা পলিটিক্যাল কথা বলছি না।’
এ সময় বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা বলেন, ‘শৃঙ্খলাবিধির খসড়ার গেজেট প্রকাশের বিষয়টি আমরা সুপ্রিম কোর্টের কথা অনুসারে বলেছিলাম। কিন্তু আপনারা সেখানে সরকারের কথা বলেছেন।’
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘পলিটিক্যাল কথা বলছি না। মি. অ্যাটর্নি জেনারেল, আপনারা জাজদের মধ্যে ডিভিশন সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন। পত্রিকায় এসেছে একজন, একজন বলেছেন। কোর্ট প্রসিডিংসে আদালতের কার্যক্রমে যা হয় তা নিয়ে পার্লামেন্ট এবং পাবলিকলি কথা বলার সুযোগ নেই।’
Advertisement
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘মাসদার হোসেন মামলায় ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং ১১৬ অনুচ্ছেদের (ক) এর ব্যাখ্যা দিয়ে রায় হয়েছে। এখন যদি আপনাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা শুনতে হয় তাহলে দুঃখজনক।’
পরে শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিত আদেশের মেয়াদ আরও দুই সপ্তাহের জন্য বৃদ্ধির আদেশ দেন।
ফলে এ সময় পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় আইনি কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এফএইচ/এসআর/পিআর