আন্তর্জাতিক

কতদূর গড়িয়েছিল নেহরু-এডুইনা ‘সম্পর্ক’

ভারতের স্বাধীনতা লাভের প্রাক্কালে দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেনের স্ত্রী এডুইনা মাউন্টব্যাটেনের মধ্যে ‘ভালবাসার সম্পর্ক’ গড়ে উঠেছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। তাদের সে সম্পর্ক ‘শারীরিক পর্যায়’ পর্যন্ত পৌঁছেছিল বলেও দাবি করা হয়।

Advertisement

এতোদিন পর জওহরলাল নেহরু ও এডুইনা মাউন্টব্যাটেনের ‘সম্পর্ক’ নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন মাউন্টব্যাটেন দম্পতি কন্যা পামেলা হিকস।

‘তাদের মধ্যে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ছিল। তবে কখনওই তা ‘শারীরিক সম্পর্ক’ পর্যন্ত গড়ায়নি’- নিজের লেখা ‘ডটার অব এম্পায়ার: লাইফ অ্যাজ আ মাউন্টব্যাটেন’ বইতে এ কথা বলেছেন পামেলা। খবর- আনন্দবাজারের।

ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় হিসেবে লর্ড মাউন্টব্যাটেন সস্ত্রীক যখন ভারতে আসেন, সে সময় পামেলার বয়স ছিল ১৭ বছর। ব্রিটেনে ৫ বছর আগে প্রকাশিত ওই বইতে পামেলা দাবি করেছেন, সে সময়ে তিনি দেখেছিলেন মায়ের সঙ্গে নেহরুর ‘গভীর সম্পর্ক’ গড়ে উঠছে।

Advertisement

তিনি লিখেছেন, ‘পণ্ডিতজির মধ্যে ব্যতিক্রমী সাহচর্য খুঁজে পান মা। বোধের যে স্তরে মা পৌঁছতে চেয়েছিলেন, তা উনি নেহরুর মধ্যে পেয়েছিলেন’

যদিও পরবর্তীকালে নেহরুর চিঠি পড়ে পামেলা উপলদ্ধি করেন নেহরুর কাছে তার মায়ের গুরুত্ব। তবে তাদের সম্পর্কে ‘যৌনতা’ এসেছিল কিনা সে প্রশ্নও তার মনে উদয় হয়। নেহরুর চিঠি পড়ার পর পামেলার কাছে এ অস্পষ্টতা দূর হয়।

পামেলা লিখেছেন, ‘মা বা পণ্ডিতজির কারোই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মতো সময় ছিল না। তারা খুব কম সময়ই একা থাকতেন। প্রায় সব সময়েই তাদের ঘিরে বিভিন্ন কর্মী, পুলিশ এবং অসংখ্য ব্যক্তিরা থাকতেন।’

বইতে পামেলা জানিয়েছেন, ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে নিজের পান্নার আংটিটা নেহরুকে দিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এডুইনা। নেহরু সেটা নেবেন না বুঝতে পেরে নেহরু-কন্যা ইন্দিরাকে আংটিটা দিয়ে যান এডুইনা।

Advertisement

সে সময় এডুইনা বলেছিলেন, নেহরু আর্থিক সংকটে পড়লে ইন্দিরা যেনে আংটিটা তার জন্য বিক্রি করে দেন। কারণ নেহরু যেভাবে লোকজনকে আর্থিক সহায়তা করতেন; তার সম্পর্কে এ ধারণা তৈরি হয়েছিল লেডি মাউন্টব্যাটেনের।

মাউন্টব্যাটেন দম্পতির বিদায় অনুষ্ঠানে সরাসরি এডুইনার উদ্দেশে নেহরু বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘আপনি যেখানেই গিয়েছেন, শান্তি নিয়ে এসেছেন। আশা, উৎসাহ দিয়েছেন। তাই ভারতীয়রা আপনাকে ভালবাসবেন, শ্রদ্ধা করবেন। আপনাকে এখানকার একজন বলেই মনে করবেন। আপনি চলে যাচ্ছেন বলে দুঃখ পাবেন, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।’

১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে মাউন্টব্যাটেন ভারতের ভাইসরয় নিযুক্ত হন ও একই বছরের মধ্য আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বে থাকেন। তার সময়কালেই ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান ও ভারতের জন্ম হয়।

স্বাধীনতা লাভের পর স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হন মাউন্টব্যাটেন। এ পদে তিনি ছিলেন ১৯৪৮ সালের জুন পর্যন্ত। ভাইসরয় ও গভর্নর জেনারেলের দায়িত্ব পালনকালে তার স্ত্রীর সঙ্গে ‘সখ্য’ গড়ে ওঠে স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর।

এসআর/জেআইএম