বিশেষ প্রতিবেদন

কমল গ্যাস, বাড়ল পানির দাম

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের পানির দাম বাড়িয়েছে ঢাকা ওয়াসা। আগামীকাল মঙ্গলবার (১ আগস্ট) থেকে পানির নতুন দাম কার্যকর হবে। উৎপাদন খরচ, পরিচালনা ব্যয় ও মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে আংশিক সামঞ্জস্য রাখার যুক্তি দেখিয়ে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

তবে পানির দাম বাড়লেও কমেছে গ্যাসের দাম। গতকাল রোববার আবাসিকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

ওই রায়ের ফলে ১ আগস্ট থেকে কর্তৃপক্ষ আর বাড়তি হারে গ্যাস বিল আদায় করতে পারবে না। তবে গত জুন থেকে বাড়তি হারে যে বিল গ্রাহকরা দিয়েছেন, তা তারা ফেরত পাবেন না। সরকারের নেয়া বাড়তি দামের বিষয়টি রায়ে মার্জনা করা হয়েছে।

এদিকে, রোববার ঢাকা ওয়াসার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ অগাস্ট থেকে গৃহস্থালিতে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ১০ টাকার বদলে এখন ১০ টাকা ৫০ পয়সা হবে। বাণিজ্যিক গ্রাহকদের প্রতি হাজার লিটার পানির জন্য এখন ৩২ টাকার পরিবর্তে ৩৩ টাকা ৬০ পয়সা দিতে হবে।

Advertisement

ভোক্তাদের মতামতের তোয়াক্কা না করেই পানির এ দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর কলাবাগানের বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, এমনিতে সাধারণ মানুষ নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপন করছেন। এর ওপর এভাবে পানির দাম বাড়ালে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয়ভার আরও বেড়ে যাবে। সরাসরি প্রভাব পড়বে জনগণের অতি প্রয়োজনীয় নিত্যব্যবহার্য সবকিছুর ওপর। অতিষ্ঠ হবে জনজীবন।

বেসরকারি চাকরিজীবী আহসান সোহেল বলেন, সরকার পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেও বাসাবাড়িতে পানির সংকট দূর করতে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাজধানীর অনেক এলাকায় দিনের পর দিন পানি থাকে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে বিভিন্ন রোগে ভুগতে হয়।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসেই পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। পানির উৎপাদন খরচ এবং পরিচালনা ব্যয় বেড়ে যাওয়াই এ দাম বাড়াতে হয়েছে বলে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ জানায়।

এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে পানির দাম বাড়ায় ওয়াসা। তখন আবাসিক সংযোগে আট টাকা ৪৯ পয়সার জায়গায় ১০ টাকা এবং বাণিজ্যিক সংযোগে ২৮ টাকা ২৮ পয়সার জায়গায় ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ওই বছরে আরও এক দফা পানির দাম বাড়ানো হয়।

Advertisement

অন্যদিকে, গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়িয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নতুন মূল্য ঘোষণা করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দুই ধাপে বর্ধিত এ মূল্য কার্যকরের কথা বলা হয়। প্রথম ধাপে ১ মার্চ থেকে গড়ে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বাড়ানো হয় গ্যাসের দাম। প্রথম ধাপের বর্ধিত মূল্যের ওপর আরও ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বাড়ানো হয় দ্বিতীয় ধাপে, ১ জুন থেকে যা কার্যকরের কথা বলা হয়। বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী, ১ জুন থেকে এক চুলার ক্ষেত্রে মাসিক বিল বেড়ে হয় ৯০০ ও দুই চুলার ৯৫০ টাকা।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে ১ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে অ্যানার্জি রেগুলেটরি কমিশনের প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন।

গতকাল রোববার দ্বিতীয় ধাপে গত জুন থেকে আবাসিকে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। ফলে এখন থেকে গ্যাসের দাম আগেরটাই থাকবে।

এআরএস/এমএআর/জেআইএম