ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্যতম একটি ব্যস্ত সড়ক প্রগতি সরণি (বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম সড়ক)। খিলক্ষেত-কুড়িল বিশ্ব রোড়ের সঙ্গে রামপুরা-মালিবাগকে যুক্ত করেছে এই সড়ক। ব্যস্ততম এই সড়কে রিকশা থেকে শুরু করে চলে দূরপাল্লার বাস। কিন্তু প্রতিনিয়ত যানজটে নাকাল এই রোডের যাত্রীরা। বিশেষ করে উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় যাত্রীদের। রাস্তাতেই নষ্ট হচ্ছে তাদের মূল্যবান সময়।উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত (দুই কিলোমিটার) অতিক্রম করতে সময় লেগে যায় আধা ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত। এর কারণ হিসেবে সরেজমিনে দেখা গেছে- চালকদের নিয়ম ভাঙার প্রবণতা, অন্য চালকের সঙ্গে অসুস্থ প্রতিযোগিতাসহ অপরিকল্পিত ট্রাফিক ব্যবস্থা, যত্রতত্র পার্কিং, বেশ কয়েক জায়গায় ইউটার্ন, রাস্তা প্রশস্ত না করে সংযোগ সড়ক, ফুটপাত দখলসহ নির্মাণাধীন মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের কারণে দিনে দিনে আরো তীব্র আকার ধারণ করছে রাজধানীর এই ব্যস্ত সড়কের যানজট।শাহজাদপুর থেকে গুলশান-১ যেতে এবং মধ্য বাড্ডা থেকে গুলশান-২ যেতে দুটি প্রশস্ত সংযোগ সড়ক রয়েছে। এছাড়া প্রগতি সরণির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বেশ কয়েকটি গলি। পুরো বাড্ডা এলাকাজুড়ে যে সব সরু গলি রয়েছে সে গুলোর মুখ বের হয়েছে এ সড়কে। আশেপাশের গলি থেকে রিকশা বা অন্য গাড়ি বের হয়ে রাস্তা পার হচ্ছে। তবে এখানে নেই কোনো সিগন্যাল। আবার প্রতি গলি অনুযায়ী ট্রাফিক দেয়াও সম্ভব নয়। ফলে বাসচালক থেকে শুরু করে ভ্যানচালক, সবারই আগে যাওয়ার প্রবণতা। এর ফলে সবসময়ই লেগে থাকে যানজট।ব্যস্ত এই সড়কে সব ধরনের বাহন চলালচল করে। দূরপাল্লার বড় বাস, যাত্রীবাহী ছোট বাস, প্রাইভেট গাড়ি, পিকআপ, রিকশা, ভ্যান এবং ঠেলা গাড়ি। ফলে যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না।যানজটে বসে থাকা তুরাগ বাসের চালক ইব্রাহিম জাগো নিউজকে জানান, আগে কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে বসুন্ধরা পর্যন্ত যানজট ছিল। কিন্তু বসুন্ধরার ইউটার্ন বন্ধ করে দেওয়ায় এখন যানজট হয় উত্তর বাড্ডা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত। ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এই রাস্তা পাড় হতে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ লাগার কথা। কিন্তু এখন সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। কোনো সময় দুই ঘন্টাও লেগে যায়।তিনি আরো বলেন, মধ্য বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ পার হতেই আধা ঘন্টা থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে। যানজটের কারণ হিসেবে সংযোগ সড়ক, ইউটার্ন আর ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়াকেই দায়ী করলেন এই চালক।চাকরিজীবী মোহাম্মদ মানিক বলেন, সব সময় এই রোড়ে যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে মধ্য বাড্ডা গুলশান লিংক রোড থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত। প্রতিদিন যানজটের কারণে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্রিজ পর্যন্ত হেঁটে যেতে হয়। আর বিভিন্ন দোকানের সামনে ফুটপাত দখল থাকায় হাঁটতেও সমস্যা হয়। বাধ্য হয়ে ফুঁটপাত রেখে রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। কোনো জরুরি কাজ থাকলেও যানজটের কাছে অসহায় আমরা নগরবাসী।ঢাকা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের এডিসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, ফ্লাই ওভারের (মগবাজার-মৌচাক) কাজের কারণে রামপুরা ব্রিজের পরে গাড়ি স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারে না। ব্রিজের এক পাশে আফতাব নগর ও বনশ্রী অন্য পাশে হাতিরঝিল সংযোগ সড়ক থাকায় যানবাহনের চাপ বেশি। উত্তর বাড্ডা থেকে রামপুরা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জায়গায় ইউটার্ন রয়েছে। বড় গাড়ি ইউটার্ন নিতে সময় বেশি লাগে। এছাড়াও রয়েছে সংযোগ সড়ক। ফলে সব সময় যানজট লেগে যায়।তিনি আরো জানান, ট্রাফিক পুলিশ সব সময় যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। তবে মালিবাগ ফ্লাইওভার ও রামপুরার ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা ক্রসিংয়ের জন্য ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হলে যানজট কমে যাবে।এসআই/এসএইচএস/আরএস/আরআই
Advertisement