ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০২ রানের বিপরীতে খেলতে নেমে ১০৭ রান তুলতেই ৪ উইকেট নেই বাংলাদেশের। মনে হচ্ছিল, নিশ্চিত ইনিংস পরাজয়ের মুখে সফরকারীরা। ব্যাটসম্যানদের ফর্মের কারণে এমনটিই ধারণা। তবে শেষ দুই সেশনে মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ ক্রিকেট প্রেমীদের ইনিংস পরাজয়ের ধারণা পাল্টে দিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে রেকর্ড ১৩০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে তুলে আনেন। এর আগে পঞ্চম উইকেটে সাকিব আল হাসান ও রকিবুল হাসান ১০৬ রান করেন। সেটি ২০০৯ সালে।এদিকে চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫৬ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামাতে হলে এখনো ৪৬ রান করতে হবে মুশফিকের দলের। তবে আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে শেষ বিকেলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের উইকেট বাংলাদেশকে খানিকটা কষ্টই দিয়েছে। অফ ফর্মে থাকা মাহমুদুল্লাহ ওপেনার তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে অসাধারণ ব্যাটিং করেন। ২১৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের ভালভাবে সামাল দেন তিনি। শেষ বিকেলে কেমার রোচের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেবার আগে ১৫১ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬৬ রান করেন রিয়াদ। এটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক। সঙ্গী রিয়াদকে হারালেও টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। দিন শেষে ৭০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন টাইগার দলপতি। সঙ্গে ছিলেন নাসির হোসেন (৭)। ১৯৩ বলে ৮টি বাউন্ডারিতে ৭০ রানের নজরকাড়া ইনিংস খেলেন মুশফিক। তবে এই ইনিংসের জন্যে গেইল ও ব্রাভোকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। স্লিপে ১০ রানে গেইল এবং ২৫ রানে ব্রাভো মুশফিকের ক্যাচ ছাড়েন। শেষ দুই সেশন বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও সকালটি ছিল ক্যারিবিয়ানদের। সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেল স্টেডিয়ামে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশের স্পিনারদের বিপক্ষে অনায়াসে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু একই উইকেটে বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের ইনিংসে। স্পিনারদের দাপটে আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ইনিংসে সুলায়মান বেন ৫টি ও ব্ল্যাকউড ২টি উইকেট নেন। সোমবার দ্বিতীয় ইনিংসেও বেনের দাপট। তবে শুরুটা করেন পেসার কেমার রোচ। দলীয় ১১ রানে শামসুর রহমান ৪ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। দ্বিতীয় উইকেটে রান খরায় থাকা তামিম ও ইমরুল ৭০ রান যোগ করেন। এই জুটি ভাঙেন পার্ট টাইম বোলার ক্রিস গেইল। ৭২ বলে ২৫ রান করা ইমরুল অহেতুক শট খেলতে গিয়ে গেইলের শিকার হন। প্রথম ইনিংসে অর্ধশতকের দেখা পাওয়া মুমিনুল দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেন। কিন্তু দলীয় ১০৪ রানে বেনের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে রামদিনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। ২৬ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১২ রান করেন মুমিনুল। এরপর সাজঘরে ফেরেন তামিম। টেস্টে পাঁচ ইনিংস পর অর্ধশতকের দেখা পাওয়া তামিম বেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। বাঁহাতি এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে তামিমের ইনিংস ৫৩ রানে থেমে যায়। ১০৭ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৩ রান করেন ড্যাশিং ওপেনার।
Advertisement