ক্যাম্পাস

ঢাবির সিনেট অধিবেশন বর্জনের ঘোষণা ‘সাদা’ শিক্ষকদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য আগামী ২৯ জুলাই শনিবারের ডাকা সিনেটের বিশেষ অধিবেশন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সাদা দল। শুক্রবার সকাল সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

Advertisement

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাদা দলের আহ্বায়ক আখতার হোসেন খান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, সিনেট সদস্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ইস্রাফিল রতন।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক আখতার হোসেন খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের সদস্য সংখ্যা ১০৫। কিন্তু বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ৫৫। বাকি ৫০টি পদ শূন্য রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার। তাই সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত প্যানেল হতে উপাচার্য নিয়োগ লাভ করুক এটা আমাদের প্রত্যাশা। সিনেটের প্রায় অর্ধেক সদস্যপদ খালি রেখে বিশেষ করে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের মতো গুরুত্বপূর্ণ ২৫টি পদ খালি রেখে একটি অসম্পূর্ণ সিনেটের মাধ্যমে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন কারও কাছেই কাঙ্ক্ষিত নয়।

Advertisement

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটকে কার্যকর রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ‘বডি’। কিন্তু যথা সময়ে সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন না দিয়ে এবং অন্যান্য শূন্যপদ খালি রেখে এ সিনেটকে অনেকাংশেই অকার্যকর করে ফেলা হয়েছে। উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অসম্পূর্ণ একটি সিনেটের মাধ্যমে সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াকে আমরা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য বলে মনে করি না।

অধ্যাপক আখতার হোসেন খান আরো বলেন, চার বছর আগেও অনির্বাচিত উপাচার্যের দ্বারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হওয়ার পর যখন ২০১৩ সালে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করা হয় তখনো রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিসহ অন্য ক্যাটাগরিতেও অনেক সদস্যপদ শূন্য ছিল। এর প্রতিবাদে আমরা উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য আহুত সিনেট অধিবেশ বর্জন করেছিলাম। এবারও একই পুনরাবৃত্তি ঘটায় আমরা আগামীকালের সিনেট অধিবেশন বর্জন করছি।

সিনেট সভা স্থগিত করে অবিলম্বে শূন্যপদ পূরণের পর উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি করেন।

ঢাবির ভিসি প্যানেল মনোয়নের জন্য ২৯ জুলাই ডাকা সিনেটের বিশেষ অধিবেশনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।

Advertisement

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের পক্ষে করা এক আবেদনের শুনানি শেষে বুধবার আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের চেম্বারজজ আদালত ওই আদেশ দিয়েছিলেন।

এর আগে গত ১৬ জুলাই ঢাবির রেজিস্টার একটি চিঠি দেন সিনেট সভার জন্য। যাতে বলা হয়, ঢাবি অধ্যাদেশের ১৯৭৩ আর ২১ (২) ধারার অর্পিত ক্ষমতাবলে ভিসি প্যানেল মনোনয়নের জন্য উপাচার্য, ২৯ জুলাই বিকেল ৪টায় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম তখনই বলেছিলেন, আবেদনকারীদের দাবি রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের অনেক প্রতিনিধির পদ খালি। তাই এ নির্বাচন না দিয়ে সিনেট সভা ডেকে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়ন করা ঠিক নয়। এ কারণে ১৬ জুলাইয়ের এ চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৫ জন হাইকোর্টে রিট করেন।

এমএইচ/এনএফ/এমএস