জাতীয়

মতিঝিলের ফুটপাতেও হাঁটু পানি

শ্রাবণের ঢলে বাণিজ্যিক ও অফিসপাড়া হিসেবে পরিচিত রাজধানীর মতিঝিলের সবকটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। এমনকি ফুটপাতের ওপরও জমে গেছে হাঁটু পানি। বুধবার সকালের পানি বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কমেনি। ফলে বাণিজ্যিক পাড়ায় অনেকটাই স্থবিরতা নেমে এসেছে।

Advertisement

বৃষ্টির পানিতে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় ব্যস্ততম এই রাস্তায় গণপরিবহন যাতায়াতের পরিমাণও ছিল সীমিত আকারে। তবে পরিবহনের সংখ্যা কম হলেও দীর্ঘ যানজট দেখা দেয় এই এলাকায়। যে পরিবহনগুলো মতিঝিলে আসছে তার অধিকাংশই হাঁটু সমান পানির মধ্যে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকছে।

এদিকে ফুটপাতের ওপর হাঁটু পানি জমে যাওয়ায় সকালে অফিসগামীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেকেই ভেজা পোশাক নিয়ে অফিসে প্রবেশ করেন। অফিস শেষে বিকেলে বাসায় ফেরার সময়ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় অনেককে।

রাজধানীর মডার্ণ ম্যানশনে অবস্থিত একটি বেসরকরি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রহমান সিদ্দিকী বলেন, বাসা থেকে সকাল সাড়ে ৯টায় অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হই। মতিঝিলে আসতে আসতে দেড়টা বাজে। কোনো রকমে মতিঝিল শাপলা চত্বরে আসতে পারলেও অফিসে ঢুকতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অফিসের সামনের রাস্তার ফুটপাতেই হাঁটু পানি জমে রয়েছে। প্যান্ট ভাঁজ করেও বৃষ্টির পানির হাত থেকে রেহাই মেলেনি। ফলে বাধ্য হয়েই ভেজা পোশাকে অফিসে ঢুকতে হয়েছে। বিকেল ৪টার দিকে অফিস থেকে নিচে নেমে দেখি একই অবস্থা, ফুটপাতে এখনও হাঁটু পানি।

Advertisement

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় বৃষ্টির পানিতে আটকে পড়া একটি ব্যক্তিগত গাড়ির চালক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ২০ মিনিট ধরে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। গাড়ির চাকা একটুও ঘুরছে না। কিন্তু সামনে তাকিয়ে দেখেন রাস্তায় খুব বেশি গাড়ি নেই। মূলত পানির কারণেই গাড়ি চলতে পারছে না।

মতিঝিলের ফুটপাতে পোশাকের ব্যবসা করেন আলমগীর হোসেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৃষ্টি কমলে কমলাপুরের বাসা থেকে মতিঝিলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এই ব্যবসায়ী। মতিঝিলে আসতে আসতে দুপুর সাড়ে ১২টা বেজে যায়। মতিঝিলে এসে দেখেন তার ব্যবসার স্থানটিতে হাঁটু পানি জমে আছে। পানি কমে যাবে এই আশায় বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। কিন্তু বিধিবাম বিকেল সাড়ে ৪টা বেজে গেলেও তার ব্যবসার স্থলটিতে হাঁটু পানিই জমেছিল।

এই ব্যবসায়ী জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘বস কি বলব, বলেন। আপনি নিজেই তো সব দেখতে পারছেন। আমরা ছোট ব্যবসায়ী। অনেকটা দিন আনি দিন খাই। এই দোকানের আয়ের ওপরই সংসার চালানো নির্ভর করে।’

একটু বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন, মতিঝিল হলো বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে সরকারি-বেসরকারি কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলো অবস্থিত। এই এলাকায় যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে বোঝেন ঢাকার অন্য এলাকার কি অবস্থা। অথচ আমাদের মেয়র ভোটের আগে বলেছিলেন ঢাকার জলবদ্ধতা দূর করা হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কিছু হলেই আমাদের পেটে লাথি দেয়। পুলিশ দিয়ে আমাদের উচ্ছেদ করে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা দরকার, সেসব ক্ষেত্রে কোনো উন্নয়ন হয় না।

Advertisement

পূবালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, সকালে বৃষ্টির মধ্যে অফিসে আসি। অফিসে প্রবেশ করে তেমন কোনো কাজ করতে পারিনি। ভেজা পোশাক দেখে স্যার অফিস ছুটির আগেই বাসায় ফেরার অনুমতি দেন। অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ভেবেছিলাম রাস্তায় পানি কমে গেছে। কিন্তু বাইরে এসে দেখি অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সকালে যেমন পানি জমে ছিল এই ৪টার সময়ও একই রকম জানি জমে রয়েছে।

এমএএস/জেএইচ/জেআইএম