‘ভাই, আপনি কি সাংবাদিক, তাইলে হুনেন, এই বেড়িবাঁধ অহন মরণফাঁদ। এহন থনে রাজধানীর গাবতলী পর্যন্ত রাস্তা অসংখ্য খানাখন্দে ভরা। রাস্তা দিয়া বাস, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের সময় একবার ডাইনে একবার বামে কাইত হয়। যাত্রীরা ভয়ে আল্লাহর নাম জপতে থাকে। তার ওপর বৃষ্টি অইলে তো আর কোনো কথাই নাই। আন্দাগুন্দা গর্তে পইরা কতজন হাত-পায় ব্যথা পায়। আমরা তো সরকাররে ট্যাক্স দেই। পারলে একটু রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কথা লিখেন।’
Advertisement
রাজধানীর নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির অদূরে কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধে পাইকারি কাঁঠাল বিক্রেতা মোক্তার হোসেন বুধবার সকাল ৮টায় এ প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে বেড়িবাঁধ এলাকার বেহাল দশার ব্যাপারে প্রতিবেদন তৈরির অনুরোধ জানান। এ সময় সেখানে ঝির ঝির বৃষ্টি ঝরছিল। বৃষ্টির কারণে পাইকারি ফলের এ বাজারে তেমন ভিড় নেই।
মোক্তার হোসেনের কথা শুনে একটু এগোতেই চোখে পড়ল সামনের রাস্তায় গোলাকার আকৃতির বড় বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। এসব রাস্তা দিয়ে বড় বড় ট্রাক, বাস, প্রাইভেটকার, ভ্যানগাড়ি ও রিকশা হেলে দুলে চলছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, সদরঘাট থেকে মিরপুর-গাবতলী পর্যন্ত এ বেড়িবাঁধের রাস্তার অধিকাংশেরই বেহাল দশা। রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কারণে এ রাস্তার ওপর সকাল থেকে গভীর রাত অবধি যানবাহনের চাপ খুবই বেশি। বিশেষ করে বড় বড় ভারী ট্রাক এ রাস্তায় চলার ফলে রাস্তাঘাটে কার্পেটিং উঠে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
Advertisement
তারা জানান, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে রাস্তা-ঘাটের অবস্থা ভয়াবহ। গত এক বছরে রাস্তার যতটা না ক্ষতি হয়েছে, গত দুই মাসে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
দুলাল খান নামে এক ট্রাকচালক জানান, ট্রাকের চাকা বড় হওয়ায় রাস্তার গর্তে পড়ে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না কিন্তু ছোট ছোট যানবাহন যেমন মিনিবাস ও প্রাইভেটকারের চাকা রাস্তার জলাবদ্ধতায় আটকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
নবাবগঞ্জের বাসিন্দা আজাদ হোসেন নামের এক অভিভাবক জানান, মাত্র দুদিন আগেই মেয়েকে নিয়ে রিকশায় স্কুলে যাওয়ার সময় রাস্তার গর্তে উল্টে পড়ে যান। এতে তার মেয়ের বাম হাত মচকে যায়।
এ রাস্তায় দিনের বেলায় ভারী ট্রাক চলাচল বন্ধ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
Advertisement
এমইউ/জেএইচ/এমএস