উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়ি রাজধানীজুড়ে। উন্নয়নের খুঁটি দাঁড়িয়ে প্রধান সড়কগুলো ভেদ করে। কোথাও মেট্রোরেল, কোথাও ফ্লাইওভারের খুঁটি পোঁতা হচ্ছে। কোথাও আবার রাস্তা মেরামত। আর এই খোঁড়াখুঁড়ির শত আয়োজন যেন ঠিক বর্ষাতেই।
Advertisement
পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ আর যানজটের সমস্যা নিয়েই ঢাকার জীবন। উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়ে এসব প্রকল্প এখন মহাসমস্যায় রূপ দিয়েছে। রাজধানীর কোন সড়কে খনন চলছে না, তা খুঁজে পাওয়া দায়। মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, শ্যামলী, গাবতলী, মগবাজার, মৌচাক, মালিবাগ, রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার প্রধান সড়কগুলোয় মেট্রোরেল আর ফ্লাইওভারের কাজ চলছে গেল কয়েক বছর ধরে। কবে শেষ হবে তার নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। সময় ধরে প্রকল্প শুরু করলেও মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে কয়েকবার।
প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ে, বাড়ে নগরবাসীর দুঃখও। মূল রাস্তা খনন করে চলে কাজ। অর্ধেক খনন হয় বাকি রাস্তা দখল হয় ইট, পাথর, বালুসহ নানা উপাদানে। আবার যেসব ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হয়েছে, সেগুলোর নিচের রাস্তাও বন্ধ রয়েছে খানাখন্দের কারণে।
এদিকে যেসব রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলে না, রাজধানী এবং এর আশপাশের সে রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বর্ষায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও মেরামতেরও উদ্যোগ নেই এসব সড়কের।
Advertisement
রাজধানীর অদূরে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর সড়ক। হেমায়েতপুর থেকে বাঁক নিতেই সড়ক নামের বিশাল খালে পড়তে হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই জলজট সৃষ্টি হয় এ সড়কে। ভারি বৃষ্টি হলে চলাচল থমকে যায়। সড়কের প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দে ভরা। যেন দেখার কেউ নেই।
সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, এই সড়কে আটকে আছে শত শত পরিবহন। মানুষ হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না। কোমর বা হাঁটু সমান পানিতে চালাতে গিয়ে অনেক গাড়ির ইঞ্জিনই বিকল হয়ে পড়ছে। দেখা গেল, বিকল হয়ে পড়া গাড়ি অনেকেই ঠেলে পার করছেন।
একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে সড়কে জমে থাকা পানি। এই সড়কে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। রাস্তায় আটকে পড়া প্রাইভেটকারের এক চালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ রাস্তায় আর গাড়ি চলে না। আগে এমপি, চেয়ারম্যান ভোট চাইতে ঘরে ঘরে যেত। নির্বাচিত হতে এখন তো আর জনগণের ভোটের দরকার পড়ে না। এ কারণেই এমপি, চেয়ারম্যানদের মাঝে জনদায় কাজ করে না।’
রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা আরেক পথচারী বলেন, ‘রাজধানী ঢাকার সড়কই তো অচল। আর এগুলো তো লোকাল সড়ক। প্রায় দুই বছর ধরে এ সড়কের এমন বেহাল দশা। কারও নজর নাই। যারা এ অঞ্চলে বাস করি, জনপ্রতিনিধিরা তাদের মানুষ মনে করলে এই দশা থাকার কথা নয়।‘
Advertisement
এএসএস/ওআর/আরআইপি