বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মজা করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এটা প্রায় সবারই জানা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও এমন মজা করতে জানেন, তা ক’জনই বা জানত? অনেকেই আজ সেটা কিছুটা জানলেন। যখন তাকে অনুরোধ করা হলো মিডিয়ার সামনে আসতে। দু’দিন আগেই কোমরে চোট পেয়েছেন। সেজন্য হাঁটা-চলা করতেও কষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শে রয়েছেন বিশ্রামে। ক্যারিয়ারের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে, সাংবাদিকদের অনুরোধের ঢেঁকি গিলেই মিডিয়ার সামনে আসা রিয়াদের।
Advertisement
সোফায় বসার সময় টের পাওয়া গেল তার কোমরে কতটা ব্যাথা। মুখে যন্ত্রণার ছবিটাই যেন ভেসে উঠল। পাশ থেকে একজন বললেন, ‘ভাই চিকুনগুনিয়া নাকি?’ মাহমুদউল্লাহ হাসলেন। ছেড়ে দিলেন না, মজা করেই বললেন, ‘নারে ভাই চিকুনগুনিয়া নয়, কোমরগুনিয়া।’
ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকে ১০টি বছর কাটিয়ে ফেললেন। বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশকে একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন নির্ভরযোগ্য এই ব্যাটসম্যান। প্রাপ্তির খাতাও নেহায়েত ছোট নয়। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান। গত বিশ্বকাপে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
১০ বছর পূর্তিতে কোমরের ব্যাথা নিয়েও মুখোমুখি হলেন সাংবাদিকদের। বিসিবির সাংবাদিক লাউঞ্জে কথা বলতে এসেই মাহমুদউল্লাহ জানান, দায়িত্ব এখন আরও অনেক বেড়ে গেছে। বাকি যে কয় বছর খেলবেন, সে কয় বছর যেন সেই দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করতে পারেন- এই প্রত্যাশাই তার।
Advertisement
এক দশক পার করে ফেলা প্রসঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, ‘ভালো লাগছে। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ১০টা বছর পার করলাম। ১০ বছরে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, সেটা জাতীয় দলে কাজে লাগানোই বড় ব্যাপার। চেষ্টা করব আরও বেশ কয়েক বছর যাতে পারফর্ম করে যেতে পারি।’
বাংলাদেশ দলের আরও চার সিনিয়র ক্রিকেটার ক্যারিয়ারের ১০ বছর পার করে ফেলেছেন। সেটাও জানালেন মাহমুদউল্লাহ। বললেন, ‘মাশরাফি ভাই, সাকিব, তামিম, মুশফিকও ১০ বছর পার করে ফেলেছে। এটা একটা ইতিবাচক দিক দলের জন্য।’
ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারে এই ১০ বছর যেন আরও অনেক বেশি দায়িত্ববান করে তুলেছে মাহমুদউল্লাহকে। তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার নিয়ে বলতে গেলে বলবো, এখন দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। আর যে কয় বছর খেলব, এই দায়িত্ব যেন ভালোভাবে পালন করতে পারি। তারাও (মাশরাফি-সাকিব-তামিম-মুশফিক) আশা করি আরও অনেক দিন খেলবে। বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থাকায় আমাদের কম্বিনেশনটা এখন খুব ভালো।’
২০০৭ সালে অভিষেক। এরপর গত ১০ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন তিনি। নিজেকেও প্রতিষ্ঠিত করেছেন একজন অলরাউন্ডার হিসেবে। মিডল অর্ডারে নিজেকে গড়ে তুলেছেন নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে। নিজের মধ্যে কী পরিবর্তন এসেছে, সেটাই জানালেন তিনি, ‘মানসিকভাবে এখন আমি আগের চেয়েও বেশি গোছালো। আরও বেশি ইতিবাচক এবং আক্রমণাত্মক। এই জিনিসটা আমাকে বেশি সাহায্য করেছে। আর ফিটনেস এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। ফিটনেস নিয়ে সচেতনতাও বেড়েছে। তবে এটা ধরে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।’
Advertisement
ক্যারিয়ারের অপূর্ণতা কিছু আছে কি না জানতে চাইলে রিয়াদ জানালেন, অনেক অপূর্ণতার কথাই বলা যায়। তবে তার কাছে এখন বাংলাদেশ দলের সামনে এগিয়ে যাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ… আসলে যতো বছর ধরে খেলছি, এর মধ্যে তো অনেক উত্থান-পতন আছে, অপূর্ণতার কথা বললে অনেক কিছুই বলা যায়। এখন আমরা যেভাবে পারফর্ম করছি, এটা আরো কয়েক বছর করতে পারাটাই বড়। আমরা যখন শুরু করি, তখন ১০ নম্বরে ছিলাম। এখন সেরা চার বা তিনে থাকতে চাই।’
আইএইচএস/এমএস