সাহিত্য

নকিব মুকশির পাঁচটি কবিতা

যৌথাগমন

Advertisement

চন্দমুখী ঘুলঘুলির কন্দরে

হয়তো পাবো অজস্র চ্যুতি

নয়তো প্রভার ঢেউ...

Advertisement

 

উভফলও আসতে পারে 

অসহ্য অতিথির ন্যায়—

প্রত্যেক শ্বাসকে নিতেই হয় 

এমন ব্যর্থতা, দুর্জয় স্বাদ, দ্বিধারী অভিজ্ঞতা...

Advertisement

০৯/০৩/১৭

 

সংকট

আমার চারপাশে এতো এতো সংকট

ছড়িয়ে আছে যেন গুচ্ছ গুচ্ছ ফাঁস

ত্রস্তবনে হাঁটতে হাঁটতে বেসামাল

দরজার ওপাশে প্রস্তুত দিয়াশলাই...

 

মুকুটে অন্ধ বিরাজমান, বিরাজমান

মুখোশে দক্ষ চূড়াপতি—

এখানেও ছড়াতে পারো করমচার রং,

গুল্মের রহম, বিরুতের মায়া...

 

মারণ আর মরণ লেগেই আছে

কমলার বাঁকলে যেন অনন্ত এক

শিকারযজ্ঞ, টেনে আনে অমাধনুক...

০৮/১১/১৬

 

জয়িত্রির পত্র

এতো বসন্ত পর আবার লিখছি তোমায়

ক্ষরণের কালিতে, মৃত্যুর নিঝুমতায়...

কত আর ডুবে থাকা যায়, বলো! 

আমারও তো আছে মানুষের জীবন, রসুনের

কোয়ার মতোন জমে আছে সেইসব স্মৃতি,

জেগে আছে ক্ষতের মতো স্পষ্ট আজও! 

আজকাল এসব কী ভীষণভাবে খোঁচায়,

জানো, বড্ড কষ্ট হয়, নিহির, বড্ড ক্ষরণ হয়

 

ঘুম থেকে জেগেই দেখি দেয়ালে টানানো সেই 

হাস্যোজ্জ্বল মুখটি, তারপর ঝেড়েমুছে দেই 

সব ধুলোবালি এই বিরুৎ আঁচলে,

জামা প্যান্টগুলো বুকে জড়িয়ে ক্ষণকাল

ডুকরে ডুকরে কেঁদে ক্ষরণগুলো ঝরাই

লোনাজল ছেড়ে ছেড়ে...

 

তোমার সেই জুতোগুলো, জানো, আজও 

কী চক্চক করে; এই অভাগী আঁচল প্রতিদিন

তা মুছে রাখে— জানো, এরা আমার সাথে 

খুব গল্প করে, আমাকে সঙ্গ দেয়, বলে—

এরাই নাকি তুমি! সত্যি বলতে, এদের মাঝেই

আমি তোমাকে খুঁজে পাই, গন্ধ পাই 

তোমার গায়ের...

 

তোমার সেই পোর্ট্রটে, জামা, জুতো... নিয়ে 

আমার যে সংসার তা ভালোভাবেই কাটছে

ভালো থেকো নিহির, ইতি তোমার সেই অভাগী

জয়িত্রি

০৬/১১/১৬

 

মেথির ঘ্রাণ

সরু কাঁখেও টেরাকোটা থাকে, থাকে 

আহ্বানের ট্যাটু, জীবনের প্রভাস...

 

কতদিন হয়

এই মহড়ায় আসো না 

আসো না নৃত্যের মঞ্চে, আসো না 

এ পাড়ার এই জীর্ণ বাড়িতে— অমন

অভিমান করে কেউ থাকে এতদিন?

 

যার থেকে বেরিয়ে আসে অনবরত

মেথির ঘ্রাণ, তাকে কি করে ভুলি, বলো?

 

সেই চিরকুটগুলি আজও কোটরবন্দি

খুব যতনে রেখেছি, আগলে রেখেছি

স্মৃতির প্রতিটি পাতা!

 

লতানো শরীর নিয়ে কেউ এমন বিব্রত থাকে? 

 

জানো না,

সরু কাঁখেও টেরাকোটা থাকে, থাকে

জীবনের সাতরং, উল্কি, মেথির ঘ্রাণ...

০৩/১১/১৬

 

বিচ্ছেদসরণি

এ পথে এতো থোকা থোকা সজারু,

তবু আমাদের এ পথেই যাত্রা—

ওখানে, পথের অই প্রান্তেই ফুটে আছে

আমাদের নিশানা যতসব বিন্দুবাসিনীরা...

 

বাখারির দু’প্রান্তে ঝোলানো

সুখ-দুখ নিয়ে বয়ে যাই

যেন এক অনুগত দাস 

যেন আমরা এক এক একটি ট্রেনবগি—

ছুটছি আয়ুর পিছু পিছু খুঁড়ে খুঁড়ে

একাযাপনের দিকে...

 

এ প্রান্তর জুড়ে যেন ফুটে আছে

অজস্র বিচ্ছেদসরণি—এই-ই যেন

আমাদের কাঙ্ক্ষিত উপঢৌকন, 

যেন বহুব্রীহি এক সুখব্যঞ্জক... 

২৭/১০/১৬

এসইউ/পিআর