শিক্ষা

এত জিপিএ-৫ গেল কোথায়!

২০১৫ সালে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় সোয়া লাখ। আজ রোববার সেসব শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন মাত্র ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন।

Advertisement

তথ্যমতে, ২০১৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে পাস করে ১২ লাখ ৮২ হাজার ৬১৮ শিক্ষার্থী। জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ১১ হাজার ৯০১ জন।

এ পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, পাসের হার মাত্র ৬৮.৯১ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন।

দেখা গেছে, ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭৩ হাজার ৯৩২ জন শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ জিপিএ হারিয়েছে।

Advertisement

এদিকে এসএসসিতে পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন। ফলে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এত জিপিএ-৫ হারালো কোথায়?

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করা অপর্ণা রায় বলেন, আমি এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। আশা ছিল এইচএসসি পরীক্ষাতেও পাব। কিন্তু ফল হাতে পেয়ে দেখি আমি জিপিএ-৪.৫ পেয়েছি।

তিনি বলেন, পরীক্ষার ফল পেয়ে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। আমি কান্না করতে থাকি। আম্মু এসে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন।

অনেক ভালো পরীক্ষা দিয়েও এমন রেজাল্ট। তার নিজের পরীক্ষার ফলাফলের কথা মনে হলেই কান্না পায় বলে জানান।

Advertisement

এদিকে ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ধারাবাহিকতা থাকছে না বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা মাধ্যমে নতুন পদ্ধতি চালুসহ নানা পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

এইচএসসির ফলাফলে বড় রদবদলের কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পরীক্ষা পদ্ধতিতে অনেক ত্রুটি রয়েছে। পাবলিক পরীক্ষায় নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন, বহুনির্বাচনী পদ্ধতি ব্যবস্থা, সৃজনশীলে নম্বর বৃদ্ধির কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফল খারাপ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

তবে, ফল খারাপের বিষয়টিকে ইতিবাচক মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে নতুন নতুন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। পরীক্ষা পদ্ধতিতে আনা হয়েছে অনেক পরিবর্তন। যা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী।

সরকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রাতারাতি পাবলিক পরীক্ষা পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ ও এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, হঠাৎ করে পাবলিক পরীক্ষার ফল আকাশ চূঁড়ায় উঠে যাচ্ছে, আবার হঠাৎ করে তাতে ধস নামছে।

এমএইচএম/বিএ/আরআইপি