আইন-আদালত

এসব বলা ও শোনা উচিত না : ড. কামাল

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আমার একার বক্তব্য ছিল না বলে মন্তব্য করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন। গণফোরামের বর্ধিত সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

Advertisement

বিচার বিভাগ ও আইনসভার মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান কিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব কথা বলাও উচিত না, শোনাও উচিত না।

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সুপ্রিম কোর্টের এমিকাস কিউরি হিসেব বক্তব্য উপস্থাপনের পর সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হওয়াই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ড. কামাল হোসেন বলেন, শুধু আমার একার যুক্তি ছিল না, আরও সাতজন সিনিয়র ল ইয়ার আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন, সাতজন জাজ পুরো একমত হয়ে রায়টি দিয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা তো সবাই পাগল হয়ে যাইনি। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখার পর এ নিয়ে সংসদ অধিবেশনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্যরা। সেদিন তারা ড. কামালের ভূমিকারও কঠোর সমালোচনা করেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, তার যুক্তি তিনি লিখিতভাবে আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা তার অপরিচিত কেউ নন। তারা চাইলে এ বক্তব্যের অনুলিপি তাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকা উচিত নয়। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে সংসদ অভিশংসন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ‘সংবিধানের ব্যালান্সে’ আঘাত আসে না।

তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বুঝতে হবে। বিচার বিভাগ হলো সংবিধানের অভিভাবক। বিচার বিভাগকে রেফারির ভূমিকা দেয়া হয়। অন্য অঙ্গগুলো ক্ষমতার লঙ্ঘন করলে একজনকে সিটি বাজাতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।

Advertisement

অপর এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, সবাই প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চায়। যারা তদারক করবেন, তাদের নিরপেক্ষভাবে ভূমিকা পালন করতে হবে। দুই পক্ষ আছে। কাউকে ‘ফাউল’ বিচার করতে হবে। বিচার যিনি করবেন, তাকে নিরপেক্ষ হতে হবে।

তার মানে কি আপনি বলছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হতে হবে? এই প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, আমি এ পর্যন্ত থেমে যেতে চাই। নির্বাচন কমিশন যে নিরপেক্ষ থাকতে হবে, তাতে কোনো রকম দ্বিমতের অবকাশ নাই।’

কামাল হোসেন বলেন, তারা আলোচনার অপেক্ষায় আছেন। আলোচনা হলে সেখানে তারা নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে প্রস্তাব দেবেন।

তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গণফোরামের সভায় উদ্বেগ জানানো হয়।

সভা মনে করে, মানুষ বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন চায় এবং গণতন্ত্র, আইনের শাসনের পক্ষে ঐক্য চায়।

সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন, সহসভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন

এফএইচ/এমআরএম/এএইচ