বিশেষ প্রতিবেদন

মিনিটে ১৪ রোগী বিএসএমএমইউ বহির্বিভাগে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)  বহির্বিভাগে রোগীর ভিড় মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যায় বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগেও  বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার রোগী এলেও সম্প্রতি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

শনিবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রতি মিনিটে গড়ে ১৪জন রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা  গেছে। সূত্র জানায়, শনিবার বহির্বিভাগ ১ ও বহির্বিভাগ-২, দন্ত বহির্বিভাগ ও বৈকালিক বিশেষায়িত বহির্বিভাগে মোট ৮ হাজার ৩শ’ ৭৩ জন রোগী সেবা গ্রহণ করেন।

মোট রোগীদের মধ্যে ডেন্টাল অনুষদের বহির্বিভাগসহ সকালের বহির্বিভাগ-১ ও ২-এ সেবা নিয়েছেন ৭ হাজার ৬শ’ ৫০ জন রোগী। এরমধ্যে নতুন রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ১শ’৫০ জন এবং পুরানো রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৫শ’ জন। এছাড়া বৈকালিক বিশেষায়িত বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন মোট ৭ শ’ ২৩ জন রোগী। এরমধ্যে নতুন রোগীর সংখ্যা ৬শ’ ১ জন এবং পুরানো রোগীর সংখ্যা ১শ’ ২২ জন। সবমিলিয়ে শনিবার ১ দিনে মোট ৮ হাজার ৩শ’ ৭৩ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, শনিবার সকালে বহির্বিভাগ ১ ও ২, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের বিভিন্ন বিভাগ ও ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) রাউন্ড দেয়ার সময় বিশ্ববিদ্যায়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খানের চোখে উপচে পড়া রোগীর ভিড়ের দৃশ্যটি ধরা পড়ে। রাউন্ড দেয়ার সময় তিনি রোগীর ভিড় নিয়ে  সবার সঙ্গে আলাপ করেন।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে  মেডিসিন অনুষদভুক্ত ইন্টার মেডিসিন বিভাগ, কার্ডিওলজি বিভাগ, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ, হেপাটোলজি (লিভার) বিভাগ, নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভাগ, নিউরোলজি, শিশু, মনোরোগ, ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলটেশন বিভাগ, চর্ম ও যৌনরোগ ব্যাধি বিভাগ, রিউমাটোলজি বিভাগ ও শিশু কিডনি বিভাগে, সার্জারি অনুষদভুক্ত জেনারেল সার্জারি বিভাগ, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ, অবস এন্ড গাইনি বিভাগ, অটোল্যারিংগোলজি- হেড এন্ড নেক সার্জারি বিভাগ, নিউরো সার্জারি, অর্থোপেডিক সার্জারি, ইউরোলজি বিভাগ ও রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগে, বেসিক সায়েন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদভুক্ত বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইমিউনোলজি বিভাগ, ভাইরোলজি বিভাগ ও ল্যাবরেটরি মেডিসনি বিভাগে এবং ডেন্টাল অনুষদভুক্ত কনজারভেটিভ ডেনটিসট্রি এন্ড এন্ডোডনটিকস বিভাগ, অর্থোডনটিকস বিভাগ, ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জারি বিভাগ এবং প্যাডোডনটিকস (শিশু দন্ত) বিভাগে অধিক সংখ্যক রোগীর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতি মিনিটে ১৪ চিকিৎসা প্রার্থী রোগীর ভিড় ও মানসম্মত সেবা প্রদান সম্ভব কিনা এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা সেবার প্রতি মানুষের আস্থা ক্রমেই বাড়ছে। তিনি জানান, রোগীরা যাতে নির্বিঘ্নে চিকিৎসা পেতে পারে সেজন্য তিনি প্রায়ই রাউন্ড দেন। তিনি রোগীদের বসার জন্য অতিরিক্ত বেঞ্চের ব্যবস্থা করেছেন। সর্বোপরি আরএস, আরপি ও চিকিৎসকসহ সকলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি করছেন।

তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক রোগীকে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা, সুলভ মূল্যে  ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনষ্টিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গার অভাবে অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, চিকিৎসার মান নিশ্চিত করতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ছাড়াও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি করছেন।

এমইউ/ওআর

Advertisement