রাজনীতি

সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের খেলায় মেতেছে

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিকল্পিতভাবে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। এখন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের অস্ত্রবাজি ও দখলবাজিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

Advertisement

তিনি বলেন, আমরা এ কেমন ভয়াবহ দুঃশাসনের মধ্যে বসবাস করছি। দেশটাকে বর্তমান সরকার কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবিতে সামান্য বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ তাদের ওপর হামলা করলো, গুলি করলো, বুলেট নিক্ষেপ করলো, লাঠিচার্জ করলো-রক্তাক্ত হলো শিক্ষার্থীরা। গণমাধ্যমে এসব ছবি প্রকাশিত হয়েছে। অথচ মামলা করল সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে।

রিজভী বলেন, ‘যারা আক্রান্ত হলো, রক্তাক্ত হলো, আটক হলো পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা সরকারের হুকুম ছাড়া এ মামলা করেনি পুলিশ। আসলে বিনাভোটের সরকার বর্তমানে এতটাও আতঙ্কিত সামান্য মিছিল বা বিক্ষোভ দেখলেই ভয় পায়, আতকে ওঠে। অত্যন্ত ন্যায্য ও যুক্তিসংগত দাবিতে তারা আন্দোলন করছে। ৭টি কলেজকে ঢাবির অধীনে নেয়া হলেও বছর পেরোনোর পরও তাদের পরীক্ষার খবর নেই। অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তাদের সহপাঠীরা মাস্টার্স পাস করে যাচ্ছে অথচ তাদের জীবন ধ্বংসের মুখে।’

তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখের মণি গলে গেছে। এখন সে দুই চোখে কিছুই দেখেনা বলে তার পরিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। সে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার বড় ভাই গণমাধ্যমকে বলেছেন গুলির আঘাতে তার দুই চোখের মণি গলে যাওয়াসহ চোখের আশপাশের অংশ ফুলে গেছে। বর্তমানে তিনি চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। তার ভাই আরও জানায় ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ার পর বহু কষ্টে দিনমজুরি করে ওর লেখাপড়ার খরচ চালিয়েছি। পড়াশোনা শেষে ভাল চাকরি পেয়ে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল তার। কিন্তু পুলিশ ওর চোখ অন্ধ করে দিয়েছে, তার স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে।

Advertisement

বিএনপির এই নেতা বলেন, পত্রিকার পাতা খুললে বা টেলিভিশন খুললেই দেখি তাদের অস্ত্রবাজি আর খুনোখুনির দৃশ্য কিংবা ছাত্রীদের লাঞ্ছিত হওয়ার খবর। সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একই অবস্থা। আজকের পত্রিকাতেও সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে-বেগম রোকেয়া বিশ্বদ্যিালয়সহ দু’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ছেলেদের সংঘর্ষ ও মারামারির খবর। দু-দিন আগে সিলেট বিয়ানিবাজার কলেজে তাদের নিজেদের মধ্যে খুনাখুনিতে একজন নিহত হয়েছে।

তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যাক্কারজনক পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে তাদের সকল ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান। সেইসঙ্গে আটককৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন।

এমএম/এসএইচএস/জেআইএম

Advertisement