খেলাধুলা

বাংলাদেশ সফর বাতিল করে দিতে পারে অস্ট্রেলিয়া!

আবারও ভেস্তে গেলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এসিএ) মধ্যে চলা সমঝোতার চেষ্টা। সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড এবং এসিএ’র প্রতিনিধি অ্যালিস্টার নিকলসনের মধ্যে চলা আলোচনায় একটা আলো উঁকি দিয়েছিল যে, সমঝোতা হতেও পারে। কয়েকদিন ধরে চলা আলোচনায় সমঝোতার প্রক্রিয়াটা অতি ধীর গতিতেই এগুচ্ছিল। তাতে আশার ঝলকানিও ছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষই নিজ নিজ দাবিতে অনড়। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়ে গেলো আলোচনাটা। ভেঙ্গে গেলো সমঝোতা চেষ্টাও।

Advertisement

ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর না করার কারণে জুলাইর ১ তারিখ থেকেই চাকরিহীন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। চুক্তিতে স্বাক্ষর ছাড়া ক্রিকেটাররা কোনো সফরে অংশ নেবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় অস্ট্রেলিয়ান ‘এ’ দলের সফর বাতিল হয়ে গেছে। 

আগামী মাসেই অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের বাংলাদেশ সফর রয়েছে। যে সফরে খেলার কথা দুটি টেস্ট। ১৮ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের। তার আগে ১০ আগস্ট থেকে ডারউইনে বাংলাদেশের কন্ডিশনে এক সপ্তাহ অনুশীলন করার কথা অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট দলের। 

কিন্তু এখনও পর্যন্ত ক্রিকেট বোর্ড এবং খেলোয়াড়দের অ্যাসোসিয়েশন একটি সমঝোতায় আসতে না পারায় বাংলাদেশ সফর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের। ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে মিশ্র বক্তব্য শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছে এই সফরটি হবে। আবার কেউ বলছে হবে না।

Advertisement

তবে, অস্ট্রেলিয়ার যে কোনো সফরের আগে সিএ এবং এসিএর পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল আগাম সফরে যায় সংশ্লিষ্ট দেশে। কারণ নিরাপত্তাসহ আয়োজকদের আয়োজন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ। তারই অংশ হিসেবে এবারও বাংলাদেশে প্রতিনিধি দল পাঠাবে সিএ এবং এসিএ। সফর হোক না হোক আগাম এই সফরটি সেরে রাখবে অস্ট্রেলিয়া। ২৪ জুলাই এই প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।

তবে ক্রিকইনফোই জানিয়েছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) নাকি ইতিমধ্যে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) পক্ষ থেকে বার্তা দেয়া হয়েছে, সফরটি বাতিল হতে পারে- এমন একটি প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে যেভাবে ‘এ’ দলের সফর আয়োজন করে সেটাকে শেষ পর্যন্ত বাতিল করতে হয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশকেও বার্তা দিয়ে রাখা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে বিসিবি এখনও কিছু জানায়নি।

খুব সহসাই যে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে সিএ এবং এসিএর মধ্যে সে সম্ভাবনাও কম। যদিও আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় এসিএ। তারা ক্রিকেটারদেরকে সদ্য শেষ হওয়া আলোচনার বিস্তারিত জানিয়ে আবারও বৈঠক করবে এবং একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। ১ জুলাই থেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২৩০ জন পেশাদার ক্রিকেটার পুরোপুরি বেকার। এই তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে নারী ক্রিকেটাররা। সেমিফাইনালে ভারতের কাছে হারের পর অস্ট্রেলিয়ান নারী ক্রিকেটাররাও এখন বেকার হয়ে গেলেন। তারাও চলে গেলেন চুক্তির বাইরে।

এদিকে খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি না হওয়ার কারণে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে পড়েছে স্পন্সরশিপ চুক্তি নিয়ে। আগামী নভেম্বরে অ্যাশেজসহ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে স্পন্সরদের যে চুক্তিগুলো রয়েছে সেগুলোও এখন হুমকির মুখে পড়ে গেছে। একই সঙ্গে সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান চ্যানেল নাইন নেটওয়ার্কও নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছে। 

Advertisement

আইএইচএস/পিআর