আগামী সপ্তাহেই নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরি সংক্রান্ত শৃঙ্খলাবিধির গেজেট জারি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
Advertisement
গেজেট জারি করা নিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার সঙ্গে বৃহস্পতিবার আবারও বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।
তিনি জানান, আলোচনায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। আমরা গেজেট জারির খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। আগামী সপ্তাহেই তা জারি হতে পারে।
এর আগে গত ১৬ জুলাই আইনমন্ত্রী নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেদিনই তিনি বলেছিলেন বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে এ ব্যাপারে আবার বৈঠকে বসবেন তিনি।
Advertisement
সে অনুযায়ীই আইনমন্ত্রী বিকেল সোয়া ৩টায় সুপ্রিম কোর্টে এসে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
পূর্বনির্ধারিত একান্ত বৈঠক শেষে আশ্বাস দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার বলেন, রুলসের খুঁটিনাটি বিষয় বোঝার প্রয়োজন ছিল। এছাড়া কিছু বিষয় নিয়ে দ্বিমত ছিল। তা নিয়ে আজ আলোচনার পর অনেকাংশে দ্বিমত দূর হয়েছে। এখন তাড়াতাড়ি গেজেট জারি করার চেষ্টা করছি। কারণ এটা তাড়াতাড়ি করা প্রয়োজন।
এর আগে গত ২ জুলাই আপিল বিভাগ এক আদেশে বিধিমালা সংক্রান্ত গেজেট জারি করতে সরকারকে দুই সপ্তাহ সময় দেন। ওইদিনই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ১৫ জুলাইয়ের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি গেজেট আকারে প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশা করি।
এ অবস্থায় গত ১৬ জুলাই বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে ওইদিন আপিল বিভাগে শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও তা হয়নি। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই বিষয় নিয়ে আজ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী।
Advertisement
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৫ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় বিধিমালার একটি খসড়া তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। ওই বিধিমালা সংশোধন করেন আপিল বিভাগ। এ খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট এক আদেশে এই বিধিমালা গেজেট আকারে জারি করে তা ৬ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এরপর থেকে রাষ্ট্রপক্ষ কয়েক দফা সময় নেয়। সর্বশেষ আপিল বিভাগের নির্দেশে গত বছর ১২ ডিসেম্বর আদালতে হাজির হন আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব। তারা রাষ্ট্রপতির একটি প্রজ্ঞাপন নিয়ে হাজির হন। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গেজেট জারির প্রয়োজন নেই। তবে আপিল বিভাগ চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট জারির নির্দেশ দেন। কিন্তু গেজেট জারি না করে একের পর এক সময়ের আবেদন করছে রাষ্ট্রপক্ষ।
১৭ জুলাই (সোমবার) নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশে রাষ্ট্রপক্ষ আবারও এক সপ্তাহের সময় পায়। সে অনুযায়ী আগামী ২৩ জুলাই রোববার মামলাটি আবারও শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসতে পারে।
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম