আইন-আদালত

কদমতলীতে ধর্ষণের পর দুই নারী হত্যায় জড়িতরা পূর্ব পরিচিত

রাজধানীর ওয়ারীর কদমতলীতে পৃথক দিনে দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িতরা পূর্ব পরিচিত ছিলেন। শুধু টাকার জন্য নয়, ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ওই দুই নারীকে হত্যা করা হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের ডিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

এরআগে গত ১৮ জুন দিবাগত রাতে কদমতলীর পূর্ব জুরাইন এলাকা থেকে পারুল বেগম ও ১০ জুলাই একই এলাকার শিশু কবরস্থানের কাছ থেকে ফরিদা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, ওই দুই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।

পৃথক ওই দুটি ঘটনায় গত বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা এবং সাভার ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জামাল খান পাটোয়ারি, রাজিব হাওলাদার, জাকির শিকদার, রফিকুল ইসলাম শামীম ও মফিজ উদ্দিন সাগর।

আজ সংবাদ সম্মেলনে ডিসি ফরিদ উদ্দিন বলেন, জামাল ও রাজিব পরস্পর বন্ধু। রাজিব ও মৃত পারুল পূর্বে একটি কীটনাশক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। পারুলের স্বামী লিটন গাড়ি চালক। মাঝে-মধ্যে লিটন বাড়ির বাইরে থাকতেন, বিষয়টি রাজিব জানতেন। রাজিব তার বন্ধু পেশাদার চোর জামালকে সঙ্গে নিয়ে লিটনের অনুপস্থিতে তার বাসায় চুরির পরিকল্পনা করেন।

ফরিদ উদ্দিন বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজিব পারুলকে ফোন করে রাতে তার বাসায় বেড়াতে আসার কথা জানায় এবং বেড়াতে যায়। এ সময় রাজিব ও জামাল পেয়ারা, আম, হালিম ও দুইটি কোমল পানীয়ের বোতল নিয়ে যায়। কৌশলে তারা পারুলকে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে হালিম ও কোমল পানীয় খাওয়ায়। পারুল গভীর ঘুমে ঢলে পড়লে দু’জনে মিলে পারুলকে ধর্ষণ করেন।

একাধিকবার ধর্ষণের একপর্যায়ে পারুল কিছুটা চেতনা ফিরে পেয়ে চিৎকার করতে চাইলে জামাল গলা এবং রাজিব মুখ চেপে ধরেন। তারা পারুলের মুখ ও হাত-পা বেঁধে মৃত্যু নিশ্চিত হলে পারুলের স্বর্ণের নাকফুল, ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।

Advertisement

ফরিদা হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ডিসি ফরিদ বলেন, গ্রেফতারকৃত শামীম ও সাগরের সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন ফরিদা। স্বামী মারা যাওয়ার পর ফরিদা একা থাকা শুরু করেন। এ সুযোগে সাগর, শামীম ও তাদের বন্ধু জাকির ফরিদার সঙ্গে অবৈধ গড়তে পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৭ জুন রাতে তারা ফরিদাকে জোর করে ধর্ষণ করেন।

এ সময় ফরিদা চিৎকার শুরু করলে তারা মুখে চাকু ঢুকিয়ে দেয় এবং শ্বাসরোধ করে ফরিদাকে হত্যা করেন। পরে দরজায় তালা দিয়ে পালিয়ে যায়।

ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার আসামিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।

জেইউ/আরএস/এসআর/আরআইপি