আট বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে সৎবাবা আরমান হোসেন ওরফে সুমন। বুধবার দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Advertisement
এর আগে গত রোববার প্রথম দফা রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ফের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তাকে প্রথম দফায় রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আট বছর ধরে মেয়েকে ধর্ষণ করে আসছিল সৎবাবা আরমান। শুধু তাই নয়, আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে মেয়েটির এক বন্ধুকেও হুমকিও দেয়। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জুলাই রাজধানীর রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন এই হতভাগা মেয়ে। মামলার পর ১২ জুলাই রাতে রাজধানীর মগবাজারের দিলু রোড থেকে আরমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮) বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের শব্দ প্রকৌশলী।
মামলার বিবরণে আরো জানা যায়, বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ২০০৫ সালে আরমান হোসেনকে বিয়ে করেন ওই মেয়ের মা। বিয়ের বছরখানেক পর মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন মেয়েটি। চাকরির কারণে মেয়েটির মা মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের বাড়ি থেকে সকালে কর্মস্থলে চলে যেতেন। ২০০৮ সালের কোনো একদিন দুপুরে মেয়েটিকে বাবা আরমান প্রথম ধর্ষণ করেন। তখন মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ওই সময় মেয়েটির আপত্তিকর ছবি মোবাইলে তুলে রাখে আরমান। ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আরমান এরপর থেকে প্রায়ই ধর্ষণ করে আসছিল বলে এজাহারে উল্লেখ করেন মেয়েটি।
Advertisement
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মেয়েটি। পরে বাবার চাপেই গর্ভপাত ঘটান। এরপরও থেমে ছিল না তার ওপর নির্যাতন। বাধ্য হয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নিকটাত্মীয়ের বাসায় চলে যান মেয়েটি। সেখানেও পাঠানো হয় কুপ্রস্তাব। মেয়েটির এক বন্ধুকে আপত্তিকর ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠান আরমান। এছাড়া আরমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে দু’টি নকল আইডি খুলে মেয়েটি তার ছবিযুক্ত করার অভিযোগ আনেন।
জেএ/এসএইচএস/পিআর