স্বাস্থ্য

এখন অনেকটা ভালো আছি : মুক্তা

বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি আগের চেয়ে এখন অনেক ভালো। শরীরে শক্তি পাচ্ছে এবং হাতের ব্যথাও কমেছে তার।

Advertisement

বুধবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন মুক্তাকে দেখতে যান স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম। এ সময় মুক্তার সঙ্গে কথা হয় তার। স্বাস্থ্য সচিব মুক্তার শরীরের খোঁজ-খবর নেন। এ বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

দুপুর সাড়ে ১২টার কিছুক্ষণ পর স্বাস্থ্য সচিব বার্ন ইউনিটের ৬০৮ নং (এ-বি) কেবিনে যান। তিনি মুক্তকে জিজ্ঞাসা করেন, এখন কেমন আছ। উত্তরে মুক্তা জানায়, এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। আমার জন্য দোয়া করবেন।

স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম মুক্তার বাবা-মার সঙ্গেও কথা বলেন। তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না- এ বিষয়েও খোঁজখবর নেন। পরে তিনি উপস্থিত বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে মু্ক্তার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান।

Advertisement

ডা. সামন্ত লাল সেন মুক্তার সর্বশেষ অবস্থা এবং চিকিৎসা পরিকল্পনাগুলো তাকে জানান। স্বাস্থ্য সচিব ১৫-২০ মিনিট সেখানে অবস্থান করেন।

ঢামেকে ভর্তির প্রথমদিন থেকে মুক্তা রক্তশূন্যতা এবং পুষ্টিহীনতায় ভুগছিল। ওই সময় তার শরীরে রক্ত পাচ্ছিলেন না চিকিৎসকরা। তবে আগের অবস্থা থেকে এখন অনেকটাই ভালো বোধ করছে সে।

চিকিৎসকের পরামর্শে তার এমআরআই, এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি করা হয়েছে। এগুলোর রিপোর্টের ভিত্তিতে চিকিৎসার পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করবেন চিকিৎসকরা।

এর আগে জাগো নিউজকে মুক্তা তার ইচ্ছার কথা জানায়। বড় হয়ে সে সাংবাদিক হবে। আর ভালো হলে প্রথমে সে তার ছোট ভাইকে কোলে নেবে। কারণ হাতের কারণে সে তার ভাইকে কখনও কোলে নিতে পারেনি। এছাড়া লাল ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার স্বপ্নের কথাও জানায় মুক্তা।

Advertisement

‘প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়েছেন, এখন আমাকে সুস্থ করতেই হবে’- এমন দাবিও করে মুক্তা। 

মুক্তার শারীরিক অবস্থা

ঢামেকে আসার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, অপারেশনের আগে মুক্তাকে প্রস্তুত করতে হবে। তার দেহে দুই ব্যাগ রক্ত এবং এক ব্যাগ প্লাজমা দেয়ায় ইতোমধ্যে রক্তশূন্যতা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। পুষ্টিহীনতার কারণে বয়সের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ খাবার (ডাবল ডায়েট) দেয়া হচ্ছে তাকে।

মুক্তার রক্ত নিয়ে কয়েকটি টেস্ট করা হয়েছে- ইউরিন টেস্ট, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, আলট্রাসনোগ্রাফিসহ বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মাংসের টেস্টও করানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

ঢামেক হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা মুক্তাকে দেখে নিজ নিজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান দিয়েছেন। ভিন্ন ভিন্ন টেস্ট দিয়েছেন। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে। তবে চিকিৎসার মূল দায়িত্ব প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের। 

ঢামেকের একজন চিকিৎসক জাগো নিউজকে জানান, এ পর্যন্ত মুক্তার যতগুলো টেস্টের রিপোর্ট পাওয়া গেছে সবই সন্তোষজনক; তবে কয়েকটি রিপোর্টে প্রবলেম (সমস্যা) রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে ভুল চিকিৎসা কিংবা শরীরের সঠিক স্থানে চিকিৎসা না হওয়ায় মুক্তার বর্তমান এ অবস্থা বলেও ধারণা চিকিৎসকদের। 

প্রসঙ্গত, বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১২ বছর বয়সী মুক্তাকে নিয়ে জাগো নিউজে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে আসায় মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম। পরবর্তীতে তাকে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়। 

এআর/এমএআর/পিআর