বিনোদন

‘হুমায়ূন আহমেদের চার ছবিতে কাজ করে পুরস্কার পেয়েছি’

মাহফুজুর রহমান খান। আগাগোড়াই চলচ্চিত্রের মানুষ। নায়ক, পরিচালক, প্রযোজক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তবে একজন কিংবদন্তি চিত্রগ্রাহক হিসেবে তিনি চলচ্চিত্রের সম্মানিত মানুষ। ঘরে তুলেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা চিত্রগ্রাহক হিসেবে নয়টি স্বীকৃতি! সাহিত্য ও চলচ্চিত্রের আরেক কিংবদন্তি হুমায়ূন আহমদের ছয়টি ছবিতে কাজ করেছেন।

Advertisement

তারমধ্যে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘আমার আছে জল’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ এই চারটি ছবির চিত্রগ্রাহক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন।

আজ হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুদিবস। তার সঙ্গে বন্ধুর মতোই মিশেছেন মাহফুজুর রহমান খান। কাটিয়েছেন অনেকটা সময়। আছে অনেক গল্প, অনেক স্মৃতি। তারই কিছু অংশ জাগো নিউজের সঙ্গে শেয়ার করলেন তিনি। বললেন, ‘এই মানুষটার কথা মনে হলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। খুব কষ্ট পাই। হুমায়ূন আহমেদ সর্বমোট আটটি ছবি বানিয়েছেন। আমি তার ছয়টা ছবিতে কাজ করেছি।

চারটা ছবিতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। আমার জন্য এটা বিস্ময়কর ব্যাপার। তিনি আমাকে মূল্যায়ণ করতেন, সম্মান করতেন। তার মতো হৃদয়ের মানুষ আমি খুব বেশি দেখিনি।’

Advertisement

মাহফুজুর রহমান খান আরও বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদকে আমার কাছে মনে হতো- হি ওয়াজ এ সামথিং এক্সট্রা অর্ডিনারিপারসন। এ ধরনের মানুষ খুব বেশিদিন বাঁচেন না। তিনিও চলে গেলেন অবেলায়। তার কাজ করে যে আরাম, যে প্রশান্তি সেটা অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করা যায় না। তার স্ক্রিপ্ট হাতে নিলেই বোঝা যেতে কোথায় ক্যামেরা বসাতে হবে, উনি কী ধরনের দৃশ্য চাচ্ছেন।

এত বড় মাপের মানুষ, কখনো অহংকার দেখিনি। ক্যামেরা সম্পর্কে পরিচালকরা খুব একটা জানতে চান না। কিন্তু তিনি অনেক কিছু জানতেন। তারপরও কোনোদিন আমাকে খবরদারি করেননি। গুণের কদর করতে জানতেন তিনি। তার আরেকটি বিশেষ গুণ, খুব ভালো টিম গঠন করতে পারতেন। এজন্য তার কাজগুলো সহজ হয়ে যেত।’

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে প্রথম দেখার স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনে প্রথম দেখা হয়েছিল আমাদের। সে প্রায় ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকের কথা। উনি সেন্টমার্টিনে ছিলেন। আমিও একটি ছবির শুটিংয়ে গিয়েছিলাম। তার সঙ্গে দেখা হয়। অনেক কথা হয়েছিল। দেখলাম ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফি নিয়ে তার রাজ্যের আগ্রহ।

মাঝে অনেকটা সময় গ্যাপ হয়ে গেল। একদিন মেকআপম্যান দীপক সুর একদিন এসে বললেন হুমায়ূন ভাই আপনাকে উনার বাসায় যেতে বলেছেন। গেলাম। উনি ‌‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবির গল্প শোনালেন।

Advertisement

আমাকে ক্যামেরার দায়িত্ব নিতে বললেন। উনার গল্প শোনলে তো না করার কোনো সুযোগই নেই। আমিও করতে পারিনি। শুরু হলো ‘গ্রেট ম্যান’র সঙ্গে কাজ করা। তারপর অনেক স্মৃতি আর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে হৃদয়ের অলিন্দে। তিনি আজ নেই। দোয়া করি বেহেশত নসিব হোক তার। এদেশের চলচ্চিত্র তাকে চিরদিন মনে রাখবে।’এলএ