সংকট নিরসনে এবার সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্হার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাতারকে নতুন ছয়টি নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের শর্ত দিয়েছে সম্পর্কচ্ছেদকারী মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশ। একই সঙ্গে কাতার সংকট সমাধানে আগের কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে সৌদি জোট। নতুন নীতিমালার বিষয়ে আলোচনা ও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
Advertisement
বুধবার মার্কিন প্রভাবশালী বার্তাসংস্থা এসোসিয়েট প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৫ জুন সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্হায় সমর্থনের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর ও বাহরাইন। তবে কাতার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। পরে সংকট সমাধানে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বেঁধে দেয়া শর্তও প্রত্যখ্যান করেছে কাতার।
জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দাল্লাহ আল-মুয়াল্লিমি সাংবাদিকদের বলেন, গত ৫ জুলাই কায়রোতে চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকে কাতার সংকট সমাধানে নতুন ছয়টি নীতিমালার ব্যাপারে একমত হয়েছে; আশা করছি কাতার এসব বাস্তবায়নে সমর্থন দেবে।
Advertisement
নতুন ছয় নীতিমালার মধ্যে চরমপন্হা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, এ ধরনের গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন ও তাদের নিরাপদ আশ্রয় বন্ধের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা ও বিদ্বেষ ছড়াতে এমন উস্কানিমূলক সব ধরনের কার্যক্রম ও বক্তৃতা-বিবৃতি দেয়া থেকে বিরত থাকার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে।
আল-মুয়াল্লিমি বলেন, চার দেশের জোট মনে করে, এ ছয় নীতিমালা মেনে নেয়া কাতারিদের জন্য সহজ হবে। নতুন করে বেঁধে দেয়া এই শর্ত বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে সৌদি এই কর্মকর্তা বলেন, নীতিমালার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
তবে নীতিমালা বাস্তবায়নের কৌশল ও প্রক্রিয়া নিয়ে উভয়পক্ষই আলোচনা করতে পারে বলে জানান তিনি। সৌদি এই রাষ্ট্রদূত আগের ১৩ শর্তের সঙ্গে এই নতুন ছয় নীতিমালার ব্যাখ্যা করেন। তবে আগের কঠোর শর্তগুলো থেকে কিছুটা সরে এসে সৌদি জোটের নমনীয় অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন আল-মুয়াল্লিমি।
এর আগে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে আনা, চরমপন্হা ও সন্ত্রাসবাদে সমর্থন এবং অর্থায়ন বন্ধসহ কাতারকে ১৩ শর্ত বেঁধে দেয়া হয়। দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরা বন্ধ করে দেয়ার মতো কঠোর শর্তও দেয় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। এছাড়া কাতার থেকে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র তুরস্কের সেনাবাহিনীর ঘাটি কাতারে বন্ধ করার শর্ত দেয় ওই চার দেশ।
Advertisement
উস্কানি ও সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি বলে আল-মুয়াল্লিমি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, আল-জাজিরা বন্ধ করা আবশ্যক নয়।
সৌদি এই কর্মকর্তা বলেন, আল-জাজিরা বন্ধের মাধ্যমে যদি সব নীতিমালা মানা হয়, তাহলে ভালো। তবে আল-জাজিরা বন্ধ ছাড়াই যদি আমরা সব পাই সেটা আরো ভালো। এখানে মূল বিষয় হচ্ছে; উদ্দেশ্য এবং নীতিমালা।
এসআইএস/পিআর