আইন-আদালত

সাংবাদিকরা আমাকে ফাঁসিয়েছে : গৃহকর্ত্রী নদী

‘সাংবাদিকরাই আজ আমাকে ফাঁসিয়েছে। তাদের জন্যই আজ আমার এ সাজা হলো। আমার চেয়ে আরও অনেকেই বড় অপরাধ করেছে। কিন্তু তাদের কোনো সাজা হয়নি।’

Advertisement

মঙ্গলবার গৃহকর্মী নির্যাতনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাণ্ডপ্রাপ্ত গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী রায় ঘোষণা শেষে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন।

রায় ঘোষণার পর এজলাসেই নদী তার মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকেন। তার মা নদীকে সান্ত্বনা দেন। নদী বলেন, আজ আমি অসহায়। আমার দুটো বাচ্চা আছে। তাদের কে দেখবে? এ শাস্তির চেয়ে আমার মৃত্যুই অনেক ভালো।

রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড। এই অর্থদণ্ডের টাকা পাবেন  আদুরি। অপর আসামি নওরীন জাহান নদীর মা ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরিকে। ওই ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।

মামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় নদীকে। সেই থেকে নদী কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন তার মা ইসরাত জাহান। গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার।

জেএ/এআরএস/জেআইএম

Advertisement