জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী দোতলা বাসকে উল্টোপথে চলাচলে বাধা দিয়ে ছাত্রদের মারধরের শিকার সেই পুলিশ সার্জেন্ট কায়সার হামিদ জবি ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
Advertisement
মঙ্গলবার দুপুরে রমনা থানায় সার্জেন্ট কায়সার হামিদ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা নম্বর ২৬।
সার্জেন্ট কায়সার হামিদ নিজেই জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মামলায় ৩০/৪০ জন অজ্ঞাতপরিচয়কে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় সার্জেন্টকে দায়িত্ব পালনকালে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, যানবাহন ও জন চলাচলে বাধা এবং সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
গতকাল সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় জবির তিনটি বাস উল্টোপথে যেতে চাইলে বাধা দেন সেখানে দায়িত্বরত সার্জেন্ট কায়সার হামিদ। পরে সঠিক পথেই গন্তব্যে যেতে বাধ্য হয় বাসটি।
তবে বাধা দেয়ার কারণে ওই সার্জেন্টের সঙ্গে বাসে থাকা জবির শিক্ষার্থীদের ধাক্কা-ধাক্কি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে অন্য ছাত্ররা ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে শাহবাগের দিক থেকে জবির তিনটি দোতলা বাস বাংলামোটরের দিকে আসছিল। তবে সামনে যানজটের কারণে ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকে বাস তিনটি। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর শিক্ষার্থীদের চিৎকারে বাস তিনটি উল্টোপথে সোনারগাঁও ক্রসিং মুখে মোড় নেয়। এ সময় বাধা দেন কর্তব্যরত ওই ট্রাফিক সার্জেন্ট।
এ ঘটনায় বাসের কয়েকজন ছাত্র ওই সার্জেন্টের দিকে তেড়ে আসেন। শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কি ও ওই সার্জেন্টের গায়ে হাত তোলার ঘটনাও ঘটে। তবে সর্বশেষ বাস তিনটি সঠিক পথে দিয়েই কারওয়ান বাজারের দিকে রওনা হয়।
Advertisement
ট্রাফিক সার্জেন্ট কায়সার হামিদ জাগো নিউজকে বলেন, ট্রাফিক আইন অনুযায়ী রাস্তায় যানবাহন চলাচলে নির্দেশনা ও সহযোগিতা করাই আমার কাজ। রাস্তায় অহেতুক যানজট তৈরি ও যান চলাচল গতিহীন করে উল্টোপথে যান চলাচল দণ্ডনীয় অপরাধ।
তিনি বলেন, গতকাল বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি বাস বাংলামোটরের দিকে আসে। ওই সময় কারওয়ান বাজার পর্যন্ত বেশ যানজট ছিল। কিন্তু বাস তিনটি হঠাৎই উল্টোপথে মোড় নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে যায়।
এ সময় আমার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। বেশ কয়েকজন উগ্র ছাত্র এসে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। এ ছাড়া পেছন থেকে ক’জন মারধরও করে। তাদের অন্য শিক্ষার্থীরা নিবৃত করেন। আমার অন্য সহকর্মীরাও এগিয়ে আসায় বাস তিনটি পুনরায় সঠিক লেন ধরে কারওয়ান বাজারের দিকে চলে যায়।
মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা আমাকে ডেকে নিয়ে মামলার নির্দেশ দিয়েছেন। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আজ রমনা থানায় মামলা করেছি।
ডিএমপির ট্রাফিক দক্ষিণের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার মো. আলাউদ্দীন বলেন, জবির বাস বলে কেন উল্টোপথে যাবে? কেন বা তারা সার্জেন্ট বাধা দেয়ায় ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করবেন? আইনের পোশাক পড়া কর্তব্যরত পুলিশের কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। যে কারণে তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন, মামলা করেছেন।
জেইউ/আরএস/এসআর/পিআর