আদুরি নির্যাতন মামলার রায় : সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি রাষ্ট্রপক্ষের

শিশু গৃহকর্মী আদুরিকে (১১) নির্যাতন করে মৃত ভেবে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার মামলার রায় আজ। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এই রায় ঘোষণা করা হবে। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ রায় ঘোষণা করবেন। রায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড’ দাবি করছেন রাষ্ট্রপক্ষ ও জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহমুদা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, আদুরি নির্যাতন মামলার রায় আজ (মঙ্গলবার)। আমরা সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারদণ্ড দাবি করছি।

আদুরির মামলা পরিচালনাকারী বাংলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট ফাহমিদা আক্তার রিংকিও আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন। তিনি বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। ফলে আমরা রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আশা করছি।

এর আগে গত ৯ জুলাই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার রায় ঘোষণার জন্য আজ (১৮ জুলাই, মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন।

২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরিকে। উদ্ধারের সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীরে আঘাত, মাথায় কোপ, খেতে না দেয়া- কিছুই বাদ যায়নি নির্যাতনের তালিকা থেকে।

প্রায় দেড় মাস আদুরিকে চিকিৎসা দেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুস্থ অবস্থায় যখন তাকে রিলিজ দেয়া হয় তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারত না। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল ছিল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই বছরের ৭ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ফিরে যায় আদুরি।

ওই ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনির নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।

মামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় নদীকে। বর্তমানে নদী কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন তার মা ইসরাত জাহান।

গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার।

জেএ/আরএস/এআরএস/জেআইএম