গ্রেফতার আতঙ্কে বেসরকারি এবি ব্যাংকের এমডি মসিউর রহমান চৌধুরীসহ একাধিক কর্মকর্তা ছুটি নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরেই করছেন না অফিস। আটকে রয়েছে ব্যাংকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। ফলে এক ধরনের অচলাবস্থা বিরাজ করছে ব্যাংকটিতে।
Advertisement
রোববার রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব তথ্য।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল হক জাগো নিউজকে বলেন, মামলা হয়েছে বিষয়টি আমি জেনেছি। এমডি অফিস করছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল আসেন প্রয়োজনে পরিচয় করিয়ে দেব। একথা বলে তিনি মোবাইলের সংযোগ বিছিন্ন করে দেন। এরপর একাধিকবার মোবাইলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, মামলা হওয়ার পর থেকেই এমডিসহ অভিযুক্ত কর্মকর্তারা অফিস করছেন না। কখন গ্রেফতার হন এ আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। অনেকে অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন। অনেকে চিকিৎসার নাম করে পারি জমিয়েছেন বিদেশে। অার বর্তমানে ব্যাংকটির নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ডিএমডি এম এ আব্দুল্লাহ।
Advertisement
একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকটির এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মহাদেব সরকার সুমন ছুটি নিয়ে বিদেশে পারি জমিয়েছেন। কবে আসবেন তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।
জানা গেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া মুঠোফোন অপারেটর প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম বা সিটিসেলকে অর্থ আত্মসাতে সহায়তার অভিযোগে গত ২৮ জুন রাজধানীর বনানী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংক ও সিটিসেলের ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। এর মধ্যে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), প্রধান আর্থিক কর্মকর্তাসহ (সিএফও) সাবেক-বর্তমান ১২জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
দুদকের মামলায় সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংকের গ্যারান্টি নিয়ে আটটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৩৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।
দুদকের দায়ের করা মামলায় এবি ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা হলেন- সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইজার আহমেদ চৌধুরী, এম ফজলুর রহমান, শামীম আহম্মেদ চৌধুরী, বর্তমান এমডি মসিউর রহমান চৌধুরী। ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা সালমা আক্তার, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মহাদেব সরকার সুমন, এসভিপি ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার সৈয়দ ফরহাদ আলম, আরশাদ মাহমুদ খান, মো. জাহাঙ্গীর আলম। একই ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (অপারেশন বিভাগ) শাহানুর পারভীন চৌধুরী, ব্যাংকের এভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক জার-ই এলাহী খান ও রিলেশনশিপ অফিসার মো. কামারুজ্জামান।
Advertisement
এদিকে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়ম দুর্নীতি চলছে এবি ব্যাংকে। ব্যাংকটির ঋণশৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক তদন্তে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বারবার সতর্ক করার পরও থামছে না তাদের অপকর্ম। ফলে মে মাসে এবি ব্যাংকে পর্যবেক্ষক বসিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসআই/জেডএ