যে কয়টি ক্রীড়া স্থাপনা পল্টন ময়দানে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার মধ্যে আছে কাবাডি স্টেডিয়ামও। কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। রোববার দ্বিতীয় বিভাগ কাবাডি লিগ উদ্বোধন শেষে দেশের এ জাতীয় খেলাটির উন্নয়নে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উঠেছিল রাতের পল্টন ময়দানের ‘ভয়াবহ চিত্রের’ বিষয়টিও। দিনের আলো নিভে যাওয়ার পর পল্টন ময়দানে যে অপরাধমূলক কাজ হয় সেটা আইজিপির নজরে আনলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন ব্যবস্থা নিতে।
Advertisement
পল্টন ময়দানে রাতে কী কী ধরনের অপরাধ হয় তাও জানতে চান মিডিয়ার কাছে। তিনি পাশে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন দ্রুত খেলাধুলার গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানকে অপরাধমূক্ত করতে। রাত হলেই বানের পানির মতো ভাসমান মানুষ এবং বিভিন্ন ধরনের অপরাধী প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম চত্বরে। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি, মাদক সেবন, পতিতাবৃত্তি সবই হয় দেশের খেলাধুলার গুরুত্বপূর্ণ এ স্থানটিতে।
‘রাতের পল্টন ময়দান যেন নেশার রাজ্য’- এ শিরোনামে জাগো নিউজে দু’দিন আগে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। ক্রীড়া পরিষদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি এখানে। অথচ রাত হলে পুরো চত্বরটি হয়ে যায় ‘নেশার রাজ্য।’ আশপাশের রাস্তায় আলোর ঝলকানি থাকলেও স্টেডিয়াম চত্বর ডুবে থাকে অন্ধকারে। এখানে আলোর কোনো ব্যবস্থাই করে না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যেন অপরাধীরে নির্বিঘ্নে অপরাধ করার পরিবেশ তৈরি করে রাখে পল্টন ময়দানের অভিভাবক সংস্থাটি। ক্রীড়া স্থাপনার পাশাপাশি পল্টন ময়দানে এখন বস্তিও গড়ে উঠেছে। এখানে বস্তি আছে শুনেই সেটা ভেঙে ফেলতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘বস্তিসহ কোনো অবৈধ স্থাপনা যেন না থাকে।’
শুক্রবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস বলেছিলেন, ‘এখনই আমি স্টেডিয়াম প্রশাসককে বলে দিচ্ছি বস্তি ভেঙে দিতে।’ তিনদিনেও ক্রীড়া পরিষদের সচিবের সে নির্দেশনা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পর্যন্ত পৌঁছায়নি কিংবা নির্দেশনা দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। যদিও রোববার সন্ধ্যায় অশোক কুমার বিশ্বাস বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রশাসক তো আমাকে নিশ্চিত করেছে বস্তিঘর ভেঙে দেয়া হয়েছে।’
Advertisement
পল্টন ময়দানের বস্তিঘর উঠেছে সেখানে অবৈধভাবে নার্সারির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। বস্তিঘরটা যেন ‘অপরাধীদের বাগানবাড়ী।’ অবৈধ নার্সারি ব্যবসার সঙ্গে কোনো কোনো ক্রীড়া ফেডারেশনের লোকজন, এমনকি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কেউ জড়িত থাকতে পারেন বলে অভিযোগ আছে। যে কারণে হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম ও রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সের মাঝে বহাল তবিয়তেই দাঁড়িয়ে বস্তিঘরটি। বস্তিঘর হলেও হয়তো এর ‘খুঁটি অনেক শক্ত’। এ কারণেই ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা সত্ত্বেও সেটা ভাঙা যায়নি।
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম