আইন-আদালত

নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি মামলার শুনানি হয়নি

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করা সংক্রান্ত মাসদার হোসেন মামলার আজকের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি।

Advertisement

রোববার সকালে মামলাটির শুনানির জন্য দিন নির্ধারিত থাকলেও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ শুনানি না করে নট টুডে বলে আদেশ দেন।

আবার সুপ্রিম কোর্টের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) আসলে এই মামলার পরবতী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

এর আগে গত ২ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে আবারও সর্বশেষ সময় বেঁধে দেন আপিল বিভাগ। তবে ওইদিন অ্যাটর্নি জেনারেলকে সতর্ক করে দিয়ে আদালত বলেন, এটাই শেষ সুযোগ।

Advertisement

এরও আগে গত ২৯ মে বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে সরকারকে ২ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তার আগেও আপিল শুনানিতে গেজেট প্রকাশের বিষয়ে দফায় দফায় সময় নেয় সরকারপক্ষ। তার আগে গত ৮ মের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন রাখেন- সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি ফাইল বঙ্গভবন ও গণভবনে যেতে কতদিন সময় লাগে?

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন না করায় আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর তলব করেছিলেন আপিল বিভাগ।

২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকারের নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে আলাদা করতে ঐতিহাসিক এক রায় দেন। ওই রায়ে আপিল বিভাগ বিসিএস (বিচার) ক্যাডারকে সংবিধান পরিপন্থি ও বাতিল ঘোষণা করে। একইসঙ্গে জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। ১২ দফার মধ্যে ইতোমধ্যে কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার।

এজন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপিল বিভাগকে। এমনকি, ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদীপক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করেন।

এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেন সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃঙ্খলাবিধি তৈরি করে। গত ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত চারটি বিধিমালা সাত দিনের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেন। তবে এ সংক্রান্ত মামলাটি এখনও আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ১২ দফা নির্দেশনার যেসব দফা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ রয়েছে।

এফএইচ/এসআর/এমএস