দেশজুড়ে

মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়ক

বঙ্গবন্ধু সেতু উত্তরবঙ্গের জন্য আর্শীবাদ বয়ে আনলেও সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সেতু থেকে পশ্চিমে হাটিকুমরুল গোল চত্বর পর্যন্ত প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এক দিকে প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ যাত্রী ও চালকেরা। অপর দিকে শত শত যাত্রী পঙ্গু হয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী এই মহাসড়কে ডিভাইডারসহ কড্ডার মোড়ে ফুট ওভারব্রিজের দাবি করলেও তা এখনো বাস্তবে রূপ পায়নি। যে কারণেই প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এ মহাসড়কের ঝাঐল ওভারব্রিজের কাছে দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে যেখানে প্রাণ হারান প্রায় ৬২ জন।   এদিকে, শনিবার গাইবান্ধার অন্তরা পরিবহনের একটি বাসে চড়ে নিম্ন আয়ের মানুষেরা কাজের সন্ধানে ঢাকার পথে রওনা দিলেও সিরাজগঞ্জের সীমান্তবাজার এলাকায় আটকে যায় তাদের স্বপ্ন। সামনে থেকে আসা একটি দ্রুতগামী টিন বোঝাই ট্রাকের চাকা ফেটে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুপুরের খাবার খেয়ে আধো ঘুমে থাকা মানুষ কিছু বোঝার আগেই হারিয়ে যায় ১০ টি তাজা প্রাণ। আহত হয় অন্তত ৪০জন। এর রেশ কাটতে না কাটতেই রোববার ভোর রাতে আবারো দুটি ট্রাকের সংঘর্ষে শিশুসহ মারা যায় ৩জন। আহত হয় ২জন। এরও একদিন আগে ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা যায় আরো ২জন। এদিকে এ মহাসড়কটিতে প্রতিদিনই মানুষ প্রাণ হারালেও মৃতের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটলেও এর কারণ অনুসন্ধানসহ দুর্ঘটনা এড়ানোর মতো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র দুর্ঘটনার সময় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া পর্যন্তই যে তাদের দায়িত্ব। অপরদিকে দুর্ঘটনার সময় যাত্রীদের মালামাল লুটপাট করা হয় বলেও আহত যাত্রীদের কাছে হরহামেশাই অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও কথিত আছে এক শ্রেণির সুবিধাভোগীরা মহাসড়কের পাশে অপেক্ষায় থাকে কখন দুর্ঘটনা ঘটবে। দুর্ঘটনা ঘটলেই তারা যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করবে। স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, যোগাযোগমন্ত্রী এ মহাসড়ক ঘুরে ওভারব্রিজ আর রাস্তার মাঝে ডিভাইডার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। আর ট্রাফিক পুলিশ রাস্তা নিয়ন্ত্রণ করার চাইতে অনৈতিক কাজ করতেই বেশি আগ্রহী বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের মোহাম্মাদ আরিফ হোসেন জানালেন, প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার মতো ব্যবস্থা সদর হাসপাতালে থাকলেও দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার ব্যবস্থা এখানে নেই। তবে কেউ দীর্ঘ চিকিৎসা নিতে ব্যর্থ হলে পঙ্গু হবার সম্ভাবনা থেকে যায়।বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বললেন, এখানে বাসের চাইতে ট্রাকেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। অনেক সময় ট্রাকের ড্রাইভাররা গাড়ি চালাতে চালাতে ঘুমিয়ে পড়ে যে কারণে বড় দুর্ঘটনা ঘটে।বাদল ভৌমিক/এসএস/আরআইপি

Advertisement