জাতীয়

মোদির সফরে আলোচনায় সুন্দরবন

জুনে বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির সফরের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দেশের সরকারই বর্তমানে এই ঐতিহাসিক সফরের এজেন্ডা চিহ্নিত করা এবং চূড়ান্ত করার কাজ করছে। সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের অভিন্ন বন সুন্দরবনের সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হবে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।গত শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় বিভিন্ন চুক্তির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বহু প্রতীক্ষিত স্থলসীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত সংশোধনী বিলটি সর্বসম্মতভাবে ভারতের সংসদে পাস হওয়ায় মোদি সরকারকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।তিনি আশা প্রকাশ করেন যেভাবে স্থলসীমান্ত বিলটি সংসদে পাস হয়েছে ঠিক সেই পথে হেঁটেই তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তিও একদিন বাস্তবে রূপ নেবে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরের ওপরও জোর দেন শাহরিয়ার আলম।প্রায় চার বছর আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরকালে সুন্দরবন সংরক্ষণের বিষয়ে সমঝোতাপত্র সই করে দিল্লি এবং ঢাকা। তবে ওই সময় কাজ বলতে কোনো কিন্তু হয়নি। মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে প্রকল্পটিকে আবারো হিমঘর থেকে বের করে বাস্তবায়িত করতে চাইছে ভারত সরকার।ভারতের সরকারি সূত্র জানায়, এর ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং নজরদারির ক্ষেত্রে তৎপরতা যেমন বাড়বে, পাশাপাশি প্রতিবছর বন্যা এবং সাইক্লোন থেকে এলাকাটিকে বাঁচানোর জন্যও নতুন করে যৌথ পদক্ষেপ করা সম্ভব হবে। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও বন্যা- এসব আমাদের দু’দেশেরই সাধারণ শত্রু। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এক্ষেত্রে খুব শিগগিরই আমরা উদ্যোগী হব।দেশটির পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর রোববার জানান, যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। তার কথায়, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিবেশী নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। আমরা চাইছি বাণিজ্য, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, সীমান্ত- সব ক্ষেত্রে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা বাড়ুক।দেশটির কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, সংসদের দুই কক্ষে ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত বিলটি পাশ হওয়ার ফলে যে ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তাকে কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এবার লক্ষ্য মোদি সরকারের। সে ক্ষেত্রে সুন্দরবনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি মোদির সফরে অগ্রাধিকার পেতে চলেছে।এছাড়া রেল, সড়ক ও নদীপথের মাধ্যমে বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জয়শঙ্কর। পাশাপাশি, ভারত থেকে বাড়তি ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি, মেঘালয় এবং ত্রিপুরায় আরো সাতটি সীমান্ত হাট, সীমান্তে বাণিজ্য সুগম করার জন্য আরো ১০টি শুল্ক স্টেশন তৈরির কথাও ঘোষণা হতে পারে মোদির সফরে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।বিএ/আরআই

Advertisement