স্বাস্থ্য

পায়ের আঙ্গুলগুলো মিশে গেছে মাহমুদার

অনেক দিন ধরেই ডাক্তার মাহমুদাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলছেন। কিন্তু আমি পেশায় একজন ভ্যানচালক। সেখানে কত টাকা খরচ হবে সেটা জানি না। হাসপাতালে গেলে ভর্তি নেবে কীনা তাও জানি না। তাছাড়া ঢাকায় আমার কোনো আত্মীয়ও নাই। কোথায় গিয়ে উঠবো, কে আমাকে সাহায্য করবে এই চিন্তায় মেয়েকে নিয়ে আজো এলাকায় পড়ে আছি। ইতোমধ্যে গরু-ছাগল বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা যোগাড় করেছি। এছাড়াও এলাকার এক ভাই ২০ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। 

Advertisement

জাগো নিউজকে এভাবেই বলছিলেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বনগাঁও গ্রামের গাডাংপাড়ার ভ্যানচালক আবদুর রহিম। তার বড় মেয়ে মাহফুজা পুরোপুরি সুস্থ হলেও ছোট মেয়ে ৮ বছর বয়সী মাহমুদা জন্মের পর থেকেই পুরো শরীর জুরে ঘা আক্রান্ত। জন্মের পরপরই শরীরে একটি ফসকা উঠেছিল মাহমুদার। এরপর থেকেই তার সম্পূর্ণ শরীর ঘা দিয়ে ভরা। এই ঘায়ের কারণে হাত ও পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছে তার। ঘায়ের কারণে পায়ের আঙ্গুলগুলোও মিশে গেছে মাহমুদার।

দিনাজপুর সদর হাসপাতাল, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও রংপুর মেডিকেল কলেজের বেশ কিছু ডাক্তার দিনাজপুরে বসেন তাদের কাছেও মেয়েকে নিয়ে গেছেন আবদুর রহিম, কিন্তু কোনো লাভ হয় নি। বর্তমানে মাহমুদা দিনাজপুরের পারবর্তীপুর উপজেলার ল্যাম্ব হাসপাতালের চিকিৎসা নিচ্ছে। 

মাহমুদার বাবা আব্দুর রহিম জানান, মাহমুদা বর্তমানে ল্যাম্ব হাসপাতালের ডাক্তারদের চিকিৎসায় রয়েছে। এখানে অনেক বিদেশি ডাক্তারও বসেন। কিন্তু কোনো উন্নতি হচ্ছে না মাহমুদার। এর আগে দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেলের ডাক্তারদের দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়েছি তাতেও লাভ হয়নি। ডাক্তাররা অনেক আগেই বলেছিলেন মাহমুদার রোগের চিকিৎসা পিজি হাসপাতালে সম্ভব। সেখানে নাকি এ রোগের কারণ শনাক্ত করা যায়।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, মেয়ের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী এমন কেউ নেই যে সাহায্য করেনি। ভ্যানটা ছাড়া আর বিক্রি করার কিছুই নেই আমার। জানি না তার পেছনে আর কত টাকা খরচ হবে? এসব কারণে এতদিনও মেয়েকে নিয়ে পিজি হাসপাতালে যেতে পারি নি।

মাহমুদার মা শাহিদা বেগম জানান, মাহমুদাকে জামা পড়ানোর পর সেটি খোলার সময় ঘা থেকে চামড়া উঠে আছে। শরীরের চামড়াগুলো পাতলা হয়ে গেছে তার। সামান্য আঘাতেই ফেটে রক্ত বের হয়। জানি না এটা কি রোগ তার। মেয়েটা যে কত কষ্ট পাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি। গরমের সময় তার শরীর থেকে খুব গন্ধ বের হয়। তখন কেউ কাছে যায় না তার। কিন্তু আমি তো মা, সবকিছু সহ্য করতে হয় আমাকে। স্যার, আপনারা আমার মেয়েটাকে বাঁচান।

মাহামুদাকে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে সাহায্যের প্রয়োজন। কেউ সাহায্য করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন মাহমুদার বাবা আব্দুর রহিমের ০১৭৫১-৩০০১৭৮-৩ নম্বরে (বিকাশ ও রকেট করা)। 

এছাড়াও সাহায্য পাঠাতে পারেন, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, দিনাজপুর শাখার সঞ্চয়ী ১৭২.১৫১.১৫২৩৯৬ হিসাব নম্বরে।

Advertisement

 এমএএস/এমএস