সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে যমুনা নদীর পানি। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। ভাঙনরোধে সেনাবাহিনীর ১১ রিভার ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ন কাজ শুরু করেছে। এ কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেজর মো. সাইফুল হক (পিএসসি)।
Advertisement
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রতনকান্দি ইউনিয়নের বাহুকা এলাকায় যমুনা নদীর এই বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। স্থানীয়রা বাঁধ ভাঙার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন।
যমুনা নদীর পানির প্রবল চাপে বাঁধে ধস নামার কথা উল্লেখ করে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম বলেন, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে বাঁধের ভাঙা অংশ মেরামত করা সম্ভব হবে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির প্রবল চাপে বাহুকায় বাঁধ ভাঙার কারণে বাহুকা, ইটালি, সিমলা, বালিঘুগরি, চিলগাছা, ভেওয়ামারা, গজারিয়া ও পাঁচ ঠাকুরীসহ আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রামে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
Advertisement
এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। যমুনার প্রবল স্রোতে অন্তত ১০টি বাড়ি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রতনকান্দি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, বাহুকা উচ্চ বিদ্যালয়, রতনকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
সংবাদ পেয়ে রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয় ও জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা। উদ্বেগ প্রকাশ করে এলাকার মানুষকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ নিয়ে জেলার শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচি, সদর ও কাজিপুর উপজেলার ২২৪টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব গ্রামের প্রায় ৪১ হাজার পরিবারের প্রায় ২ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।
ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩৫০ মেট্রিক টন চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খবার ও নগদ ১২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানিয়েছেন।
Advertisement
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এফএ/এমএস