একাধিক মাদক মামলার আসামি যাত্রাবাড়ীর ফরমান উল্লাহ খান ওরফে নিরব এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ব্যবসার সুবিধার্থে তিনি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। কয়েকবার মাদকসহ ধরাও পড়েন পুলিশের হাতে।
Advertisement
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কথিত পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে দাপটেই চলছিল নিরবের মাদক ব্যবসা। সম্প্রতি মাদকসহ ফের গ্রেফতার হন। তাই নতুন মামলা থেকে স্বামীকে বাঁচাতে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন তার স্ত্রী শাহানা আক্তার।
ঢাকা মহানগর আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ সায়েদাবাদ রেললাইন এলাকা থেকে ফেনসিডিল, ইয়াবা, নেশা জাতীয় ইনজেকশন ও হেরোইনসহ নিরবকে গ্রেফতার করে। এরপরই পুলিশের ডেমরা জোনের সহকারি কমিশনার (এসি)-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন তার স্ত্রী।
আদালত সূত্র জানায়, গত বুধবার (১২ জুলাই) ঢাকা সিএমএম কোর্টে পুলিশের যাত্রাবাড়ী জোনের এসি, দুই ওসিসহ ১৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন মাদক মামলায় গ্রেফতার ফরমান উল্লাহ খানের স্ত্রী শাহানা আক্তার। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ তার স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি করেছিল, না পেয়ে অন্যায়ভাবে মারধর করেছে।
Advertisement
এ ব্যাপারে পুলিশের ডিসি (প্রসিকিউশন) আনিসুর রহমান বলেন, ফরমান উল্লাহ খান ওরফে নিরব একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। মামলা থেকে বাঁচতেই স্ত্রীকে দিয়ে আদালতে মামলা করিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্র জানায়, নিরব এলাকায় নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে নিজেকে অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। এ পরিচয়ে আটক মাদকসেবীদের ছাড়িয়ে নিতে থানায় তদবির করতে আসতেন। নিরবের বিরুদ্ধে থানায় তিনটি মাদক মামলা আছে। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল ডেমরার ভাঙ্গাপ্রেস ছাগলের আড়তের সামনে থেকে ইয়াবাসহ নিরব ও তার সহযোগী আলী আরমানকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানার এসআই মুহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
এর আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের পুনম সিনেমা হলের সামনে থেকে হেরোইনসহ সালাম ওরফে নাসির, মনির ওরফে বোচা মনিরের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় নিরবকে। এ ঘটনায় এএসআই লক্ষীকান্ত রায় বাদী হয়ে থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন।
Advertisement
সর্বশেষ গত ২১ জুন মাদকসহ গ্রেফতার হন নিরব। গ্রেফতারের পর স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে মোটা অঙ্কের টাকার ঘুষ দেয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার স্ত্রী। তবে নিরবের মুক্তি মেলেনি।
এ ব্যাপারে আদালতে হওয়া মামলার আসামি ও ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ের আড়ালে নিরব দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করতেন। টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসার সুযোগ চেয়েছিলেন নিরব।
তিনি আরও বলেন, মাদকসহ গ্রেফতারের পর নিরবকে ছাড়িয়ে নিতে তার স্ত্রী পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে চেয়েছিল। তাতে রাজি না হওয়ায় পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন নিরবের স্ত্রী শাহানা।
এসি ইফতেখায়রুল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওয়াকিবহাল আছেন। আইনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই মিথ্যা এ মামলার বিরুদ্ধে লড়বো। মাদক ব্যবসাসহ সকল আইনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।
তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ডেমরা এলাকায় আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য কেউ প্রমাণ করতে পারলে পরদিনই চাকরি ছেড়ে দিব।
জেইউ/এমএমজেড/এআরএস/এমএস